Darjeeling Landslide Rain Tourism Shutdown: গতরাতে প্রবল বর্ষণের ফলে দার্জিলিং ও আশেপাশের পাহাড়ি অঞ্চলে একাধিক স্থানে ধ্বস নেমেছে। আকস্মিক এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় পাহাড়ি জীবন একেবারে থমকে গেছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পথ ধষে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিপর্যস্ত। পাহাড়ের কোলে অবস্থিত জনপ্রিয় পর্যটন শহর দার্জিলিঙে প্রবেশ এখন বিপদজনক হয়ে উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করে সমস্ত পর্যটন কেন্দ্র অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত ভোর প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢাল নরম হয়ে পড়ে। আর তার জেরি শনিবার ভোর রাত থেকেই দার্জিলিং- মিরিক, দার্জিলিং- কালিম্পং, ও সোনাদা ঘুমের একাধিক অংশে ধ্বস নামে। ধসে পড়ে যায় গাছপালা, পাথর ও কাদামাটি। বহু স্থানে রাস্তার ওপর জমে থাকা কাদা ও পাথরের স্তুপ এর কারনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দার্জিলিংয়ের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র টাইগার হিল, রক গার্ডেন, বাতাসিয়া লুপসহ একাধিক দর্শনীয় স্থানে প্রবেশ সম্পন্নরূপে নিষেধ করা হয়েছে।
দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, জননিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাহাড়ি রাস্তা ভিজে ও পিচ্ছিল হয়ে পড়েছে, ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রবল। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান,“বর্তমানে পরিস্থিতি অত্যন্ত অনিশ্চিত। পাহাড়ের ঢাল নরম হয়ে যাওয়াই নতুন করে ধস নামার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পর্যটকদের পাহাড়ে না আসার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।”
পর্যটন দপ্তরের তরফেও একই সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। দপ্তরের মুখপাত্র বলেন,”পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। আবহাওয়া অনুকূলে না আসা পর্যন্ত কোন পর্যটন কেন্দ্র খোলা হবে না। উদ্ধার ও রাস্তা পরিষ্কার এর কাজ চললেও, পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত ভ্রমন থেকে বিরত থাকা বুদ্ধিমানের কাজ”।
ধসে আটকে পড়া কয়েকটি গ্রাম ও রাস্তার অংশে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন, সিভিল ডিফেন্স ও পুলিশ। যেসব জায়গাই যান চলাচল বন্ধ হয়েছে, সেখানে ভারী যন্ত্রপাতি ইনি রাস্তা পরিষ্কারের কাজ চলছে। তবে তা না বৃষ্টির কারণে উদ্ধার ও পরিষ্কার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসন জানিয়েছে, আবহাওয়া অনুকূল হলে দ্রুত রাস্তা খুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত কয়েকদিন ধরে পাহাড়ে টানা বৃষ্টিতে ছোট ছোট ধসের ঘটনা ঘটছিল, তবে গতরাতে বৃষ্টিপাত তার মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে, মোবাইল নেটওয়ার্ক কেউ সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বহু এলাকা।
আরও পড়ুন: অক্টোবর মাসে উৎসবের আমেজ! একের পর এক ছুটি দেখে নিন সম্পূর্ণ তালিকা
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টাতেও দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় বাড়ি থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে প্রশাসন সর্বোচ্চ সর্তকতা রয়েছে। পর্যটকদের অনুরোধ করা হয়েছে, আবহাওয়া স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত পাহাড় মুখী যাত্রা স্থগিত রাখতে।
বর্তমানে প্রশাসনের লক্ষ্য, দ্রুত রাস্তা পরিষ্কার করা, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করে, সেগুলি মেরামতি করা এবং পাহাড়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করা। তবে ততদিন পর্যন্ত দার্জিলিঙের সৌন্দর্য দেখতে আগ্রহীদের অপেক্ষা করতেই হবে আবহাওয়ার শান্ত হওয়ার জন্য।