Cool Strategy Personality: ‘কুল’ কথার অর্থ ঠান্ডা হলেও শব্দটির প্রভাব বেশ সাড়া জাগানো। পূর্বে আফ্রো-আমেরিকান সম্প্রদায়ের বেপরোয়া বোহেমিয়ান চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে ব্যাখ্যা করতে এই ‘কুল’ শব্দটি ব্যবহার করা হত, তবে এখন এই শব্দের ব্যবহার প্রায়শই শোনা যায়। ‘কুল’ ব্যক্তিত্বের প্রেমে অনেকেই পড়েন। কুল ব্যক্তিত্বের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সকলের কাছে উঁচুদরের।
অল্পবয়সিরা, সেই গুণের অধিকারী মানুষদের সমীহের চোখে দেখেন। কেউ কেউ অনুকরণ করার চেষ্টা করেন, আবার কেউ কেউ গুণগ্রাহী হয়ে পড়েন। এখন প্রশ্ন হলো ‘কুল’ হতে গেলে ঠিক কী করতে হয়? কোন কোন গুণ থাকলে আকর্ষণীয় চরিত্রের অধিকারী হওয়া যায়? এবার প্রথম এক গবেষণায় প্রকাশ্যে এলো কিছু তথ্য। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
‘কুল’ হওয়া কাকে বলে?(Cool Strategy Personality)
কথায় আছে নানা ঋষির নানা মত। ‘কুল’ হওয়ার অর্থ বোঝাতে অনেকে অনেক রকম ব্যাখ্যা দিতে পারেন। এই যেমন ধরুন ‘কুল’ হওয়ার অর্থ কারো কাছে সুখে-দুঃখে অবিচল থাকতে পারার গুণ, স্নায়ুর উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারা, ভবিষ্যতের কথা না ভেবে উদ্বেগকে পাত্তা না দিয়ে শুধুমাত্র বর্তমানে বাঁচতে পারা। আবার কারো কারো কাছে স্রোতের বিপরীতে গিয়ে বিপ্লব করা, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে বদলে ফেলা এবং সমান গতিতে চলতে পারা ব্যক্তি হলো ‘কুল’।
আবার কারো কাছে সবার থেকে আলাদা ভাবে ভাবতে পারা এবং সেই চিন্তাভাবনাকে বাস্তবায়িত করার ক্ষমতা যে ব্যক্তির থাকে সেই ‘কুল’। এমনকি অনেকে বলেন দুর্দান্ত রসবোধ থাকাকেও ‘কুল’ বলা যায়। হাজার রকমের ধারণা মিললেও এর মধ্যে আসল কোনটি? কোন গুণগুলি থাকলে সত্যিই এক দারুণ আকর্ষণীয় চরিত্রের অধিকারী হওয়া যায়? এই সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে ‘জার্নাল অফ এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজি’। তাদের বক্তব্য হলো, একজন মানুষের মধ্যে মূলত ছয়টি বৈশিষ্ট্য থাকলেই তাকে ‘কুল’ বলা যেতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই ছয়টি গুণ সম্পর্কে বিস্তারিত।
কোন কোন গুণ থাকলে ব্যক্তিকে কুল বলা যায়? (Cool Strategy Personality)
যে ছয়টি গুণ থাকলে একজন ব্যক্তিকে কুল বলা যায়, তা হলো –
- কথা গোপন না রেখে, একলা গুমরে না মরে মানুষের সঙ্গে খোলাখুলি মিশতে পারা এবং খোলাখুলি কথা বলতে পারার ক্ষমতা।
- সকলেই তার নিজ জীবনে সুখী থাকতে চান। সুখ পাওয়ার নানা ধরনের তত্ত্ব থাকতে পারে, তবে আসল কথা হলো অন্যের ক্ষতি না করে সুখী থাকার চরম ইচ্ছে যে ব্যক্তির রয়েছে, সেই ব্যক্তিকে ‘কুল’ বলা চলে।
- ব্যক্তির মধ্যে নানান ক্ষমতা যেমন কর্মক্ষমতা, আর্থিক ক্ষমতা, রাজনৈতিক ক্ষমতা, বুদ্ধি এবং মেধার ক্ষমতা তার মধ্যে এনে দেয় আত্মবিশ্বাস। আর আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিকে কুল বলা চলে।
- মানুষ যদি সর্বক্ষণ ভয় পেয়ে চলে, তবে তার মধ্যেকার অর্ধেক গুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই একজন ‘কুল’ ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে ব্যক্তির মধ্যে সাহস থাকা প্রয়োজন। আর সাহস থাকলে আত্মবিশ্বাসও বেশখানিক বেড়ে যায়।
- যেকোনো বিষয় খোলামনে বিচার করা কিংবা গ্রহণ করার ক্ষমতা যে ব্যক্তির থাকে, তাকে কুল বলা যায়, অর্থাৎ একপেশে মনোভাব নয় বরং চারিত্রিক ঔদার্যপূর্ণ ব্যক্তি হলো ‘কুল’।
- কোনো বিষয় হঠাৎ করে মেজাজ হারিয়ে মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা কিংবা হঠাৎ করে কান্নায় ভেঙে পড়া ব্যক্তিকে কখনই ‘কুল’ নয়। নিজেকে আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে পারার গুণ যে ব্যক্তির থাকে, সেই ব্যক্তিকে কুল বলা চলে। উল্লেখ্য, যে ব্যক্তি তার আচরণে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন, তিনি কোনো বিষয়ে হেরে গিয়েও শেষমুহূর্তে জয়লাভ করতে পারেন।
মানুষ কুল ব্যক্তিত্বের প্রেমে পড়ে কেনো?(Cool Strategy Personality)
প্রতিটি মানুষ সাধারণত তার পছন্দের মানুষের ব্যক্তিত্বের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে প্রেমে পড়ে। মানুষের ব্যক্তিত্বের প্রেমে পড়ার কারণ হলো, ব্যক্তিত্ব মানুষের বৈশিষ্ট্য, গুণাবলী, এবং আচরণগত দিকগুলির এক জটিল মিশ্রণ। যখন কেউ কারো ব্যক্তিত্বের প্রতি আকৃষ্ট হয়, তখন সেই ব্যক্তির সঙ্গে একটি গভীর সম্পর্ক অনুভব করে এবং মনে জাগে ভালোবাসা।
একটা মানুষের ব্যক্তিত্ব কেমন হবে, সেটা নির্ভর করে বিভিন্ন্ বৈচিত্রের মাধ্যমে। এটি মনস্তাত্ত্বিক শক্তির কারণে তা পৃথক ভাবে আলাদা করে দিয়ে থাকে। একটা ব্যক্তির গতিশীল এবং সু সংগঠিত বৈশিষ্ট্য মানুষের মধ্যে বৈচিত্র্য এর দিক প্রকাশ করে তোলে। একটা ব্যক্তির জ্ঞান – আবেগ – অনুপ্রেরণা অন্যকে প্রভাবিত করে তোলে।
এর সাথে সেই ব্যক্তির চিন্তা ভাবনা, অনুভূতি এবং সামাজিক সমন্বয়ের মাধ্যমে আচরণকে বোঝায়। ব্যক্তির মধ্যে প্রত্যাশা, আত্ম-ধারণা, মূল্যবোধ এবং মনোভাব দৃঢ়ভাবে তা প্রকাশ করে। আবার নেগেটিভ দিক দেখলে একটা মানুষের প্রতিক্রিয়া এবং সমস্যা অনেক ক্ষেত্রে চাপের সৃষ্টি করে তোলে।