First Test Match India vs England: শেষ রক্ষা করতে পারলেন ভারতের নতুন অধিনায়ক শুভনম গিল( Shuvnam Gill)। ভারতের দর্শকের আশা পূরণ না করেই ফিরতে হচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে। গতকাল অর্থাৎ পঞ্চম দিনেই ছিল ফাইনাল ম্যাচ ভারত বনাম ইংল্যান্ডের (First Test Match India vs England)।
হেডলাতে খেলা চলছিল এবছরের ফাইনাল টেস্ট ম্যাচ ভারত বনাম ইংল্যান্ডের (First Test Match India vs England)। প্রথম দিনে অনেক আশা নিয়ে খেলতে নেমেছিলেন ভারতের নতুন অধিনায়ক শুভনম গিল (Shuvnam Gill) এবং তাঁর টিম।
কিন্ত টেস্ট ম্যাচের দ্বিতীয় দিন থেকে কিছুটা নড়ে গিয়েছিল অধিনায়ক শুভনম গিলের (Shuvnam Gill)। অবশেষে তাঁর দলকে পিছনে ফেলেই ড্রেসিং রুমে ফিরে আসেন শুভনম গিল।
আরও পড়ুন: প্রথম সেশনেই ব্যর্থ হলেন বুমরা – জাডেজারা, পুরো ম্যাচের রাশ ইংল্যান্ডের হাতে
শেষ মুহূর্তে ভাঙল জয়ের স্বপ্ন:
হেডিংলিতে প্রথম টেস্টের শেষ দিনে,প্রায় প্রতিটি মুহূর্তেই দারুন উত্তেজনা ছড়ালেও,শেষমুহূর্তে কিন্তু ভারতের হাতে ধরা দিল না কাঙ্ক্ষিত জয়। মাত্র পাঁচ উইকেট হারিয়েই ৩৭১ রানের বিশাল লক্ষ্য খুব সহজেই অর্জন করে ফেলল ইংল্যান্ড, আর সেইসাথেই ম্যাচের বেশিরভাগ মুহূর্তে আধিপত্য দেখানো সত্ত্বেও,ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে ০-১ এ পিছিয়ে পড়লো ভারত।(First Test Match India vs England)
গতকাল পঞ্চম দিনের খেলায় একটা এমন সময় উপস্থিত হয়েছিল, যখন এই ম্যাচটি জেতার জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল আর মাত্র ৫২ রান, কিন্তু ততক্ষনেই তারা হারিয়ে ফেলেছিল পাঁচটি উইকেট। সেইসময় ভারতীয় শিবিরে এক আশার আলো দেখা গিয়েছিল। বেন স্টোকস আউট হওয়ার পর পুরো দল চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল। শুভমন গিলের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল তখন অপেক্ষা করছিল সেই ‘একটা মুহূর্ত’-এর জন্য, যখন হয়তো কোনও ব্যাটসম্যান চটজলদি আউট হয়ে যাবে, হয়তো কোনও ভারতীয় বলার ইংল্যান্ডকে জোড়া আঘাত দিতে সক্ষম হবেন, বা হয়তো জো রুটের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি ছিনিয়ে নিয়ে ভারত ফের একবার এই ম্যাচে ফিরতে পারবে।
শেষ মুহূর্তে হতাশ ভারত:
প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা এবং রবীন্দ্র জাদেজাকে ব্যবহার করে একবার শেষ চেষ্টা করেছিলেন গিল, কিন্তু তারপর আবার একবার ভরসা রাখেন শার্দুল ঠাকুরের ওপর। যিনি আগেই ডাকেট ও ব্রুকের উইকেট নিয়ে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বল হাতে তিনি আর ‘লর্ড ঠাকুর’ হয়ে উঠতে পারেননি।
গতকাল মাঠ ভর্তি দর্শক ছিল না, কিন্তু যারা ছিলেন তারাই গলা ছেড়ে চিৎকার করছিলেন। কখনও শীতল হাওয়ার ধাক্কা, কখনও বৃষ্টি আর মাঝে মাঝে সূর্য দেখা দেওয়া- সবকিছুকে উপেক্ষা করেই তারা আনন্দে মেতে উঠেছিলেন। আর যে যে সময়ে এই ম্যাচটি চরম উত্তেজনাপূর্ণ কোনও মোড় নিয়েছে, সেইসময়ে যেন এদের উল্লাস আরও কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছিল।
এই ম্যাচের শেষ কয়েক ঘণ্টা জুড়ে যখন এই ম্যাচের উত্তেজনা একেবারেই চরমে পৌঁছে গেছে,তখন ভারত মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে কিছু একটা অসাধ্য সাধন করে দিতে। ম্যাচে নতুন বল আসার আগেই কিন্তু জো রুট তার অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রায় সম্পূর্ণ ম্যাচটিই শেষ করে ফেলেন। জয় থেকে তখন ইংল্যান্ড আর মাত্র ২২ রান দূরে।(First Test Match India vs England)
এরপর ম্যাচের একদম শেষমুহূর্তে মহম্মদ সিরাজের হাতে নতুন বল তুলে দেওয়া হলেও, ততক্ষণে এই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে। আর এই ভাগ্য যে ভারতের ক্ষেত্রে একেবারেই সহায় হয়নি,স্লিপের ক্যাচগুলি বারবার ফিল্ডারদের ফাঁকতাল গলে বেরিয়ে যাওয়াই ছিল তার সবথেকে বড় প্রমান। একদিকে শান্ত কিন্তু দৃঢ় মনোভাব নিয়ে ব্যাটিং করছেন রুট, অন্যদিকে অনুপস্থিত জসপ্রীত বুমরা,এই দুটি বিষয়ই ভারতের দুঃশ্চিন্তা ক্রমেই বাড়িয়ে তুলছিল।
এই ম্যাচে আরও একটা আশ্চর্যের রেকর্ড করে ভারত। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এর আগে কোনও দল, পাঁচ-পাঁচটি সেঞ্চুরি থাকা সত্ত্বেও কখনও ম্যাচে হারেনি। কিন্তু ভারত হেডিংলেতে সেটাও করল। প্রায় পুরো ম্যাচে আধিপত্য দেখিয়েও পঞ্চম দিনে ভারত ম্যাচ বের করে আনতে পারল না। বুমরা ও তার সাপোর্ট বোলাররা থাকলেও, ইংল্যান্ডের রক্ষণাত্মক প্রতিক্রিয়া শেষ পর্যন্ত তাদের জয়ের পথ প্রশস্ত করে দেয়।
মূলত দিনের শুরুতে যখন মেঘলা আকাশ মাথায় নিয়ে,নতুন শক্ত বলেই ডাকেট ও ক্রলি মিলে ১৮৮ রানের একটি দুর্ধর্ষ পার্টনারশীপ গড়ে ফেললেন,তখনই ভারতের মনোবলে সবথেকে বড় ধাক্কাটি লেগেছিল। আর সেখান থেকেই এই ম্যাচটি ঘুরে যায়।
নতুন অধিনায়ক শুভমান গিলের পক্ষে রক্ষণ আর আক্রমণের মধ্যে ভারসাম্য খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। শেষমেশ পাঁচ উইকেট হাতে রেখেই ইংল্যান্ড এই ম্যাচটি জয় করে নেয়।(First Test Match India vs England)
দ্বিতীয় টেস্ট হবে বার্মিংহামে,তবে এই ম্যাচটি শুরু হওয়ার আগেও এখন কিছুটা সময় আছে। ভারতীয় দলকে এখন এই সময়টা কাজে লাগাতে হবে। নিজেদেরকে আরও খানিকটা গুছিয়ে নিতে হবে, নতুন করে পরিকল্পনা সাজাতে হবে। বিশেষ করে বোলিং আক্রমণের ক্ষেত্রে কোন কম্বিনেশনটা সবথেকে সঠিক হবে, একমাত্র সেটাই এখন নির্ধারণ করে দিতে পারে, পরবর্তী ম্যাচেরফলাফল। কারণ বুমরার উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি,এই দুটি অবস্থার জন্যই এখন থেকেই প্রস্তুত ভীষণ ভীষণ থাকা জরুরি। তবে সেইসাথে হতশ্রী ফিল্ডিং নিয়েও যথেষ্ট কাজ করতে হবে ভারতকে।