Junior doctor and Mamata Banerjee meeting: আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। নৃশংস এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রেটিরাও। যত দিন এগোচ্ছে, ততই বাড়ছে প্রতিবাদের আগুন। এরই মধ্যে জুনিয়র চিকিৎসকদের কড়া আন্দোলন রয়েছে খবরের শিরোনামে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে ফের শুরু হবে এই মামলার শুনানি। তার আগেই একাধিকবার টানাপোড়েনের পর অবশেষে সম্পন্ন হল মুখ্যমন্ত্রী ও জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক।(Junior doctor and Mamata Banerjee meeting)
RG Kar Case: আরজি কর কাণ্ডের এক মাস পার। কিন্তু কতদূর এগোলো এই মামলার তদন্ত? কবে হবে বিচার? এই প্রশ্ন তুলে ও ৫ দফা দাবি জানিয়ে, জুনিয়র ডাক্তারদের ৩৬ দিনের প্রতিবাদী আন্দোলনের পর অবশেষে কাটল বৈঠক জটিলতা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে হল বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীসহ মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।(Junior doctor and Mamata Banerjee meeting)
অবশেষে ২ ঘন্টা ৫ মিনিট পর শেষ হয় রুদ্ধদ্বার বৈঠক। তারপর আরও প্রায় দুঘণ্টা ধরে বৈঠকের মিনিটস লেখার কাজ হয়। মোট প্রায় ৫ ঘণ্টা পর মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বের হতে দেখা যায় জুনিয়র ডাক্তারদের। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, ‘কর্মবিরতি জারি থাকবে। বৈঠকে কিছু মিল, কিছু অমিল হয়েছে। কিছু সদর্থক আলোচনাও হয়েছে। কিছু জিনিস মেনে নেওয়া হয়েছে। তবে অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা করা হয়নি। বাকি আমরা ধরনা মঞ্চে বলব।'(Junior doctor and Mamata Banerjee meeting)
সূত্রের খবর(Junior doctor and Mamata Banerjee meeting), আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত যে দাবি করা হয়েছিল, তা রাজ্য সরকারের তরফে মেনে নেওয়া হয়েছে। বৈঠকের মিনিটসে আন্দোলনকারীদের তরফে ৪২ জন ও রাজ্যের তরফে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ স্বাক্ষর করেছেন। ইতিমধ্যেই সাংবাদিক বৈঠক করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, ‘দুপক্ষই এই বৈঠকে খুশি। আন্দোলনরত চিকিৎসকদের দাবি মেনে, কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে সরাচ্ছে রাজ্য সরকার। এমনকি স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকেও সরাচ্ছে রাজ্য। ডিসি নর্থকেও সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ পাশাপাশি কলকাতা পুলিশে আরও কিছু রদবদলের ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেল ৪টের পর নতুন পুলিশ কমিশনারের নাম ঘোষণা করবেন মুখ্যসচিব।
সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্যভবনে জুনিয়র ডাক্তাররা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেন, ‘স্টেনোগ্রাফারদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বৈঠকে। তবে বৈঠক শেষে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। স্বাস্থ্যভবনে ফিরে এসে প্যান জিবি বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’ তারপরই বৈঠকের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যভবন থেকে বাসে করে রওনা দেন আন্দোলনকারীরা। ৬ টা নাগাদ কালীঘাটে পৌঁছায় আন্দোলনকারীদের বাস। এরপর ২ স্টেনোগ্রাফারসহ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে ঢোকেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ৬:৪০ নাগাদ শুরু হয় বৈঠক। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীকে ৫ দফা দাবির স্মারকলিপি দেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। এরপর শনিবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে স্বাস্থ্যভবনের সামনের ধরনা মঞ্চে উপস্থিত হয়ে বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ জানান। বিকেলে কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা পৌঁছালেও, শেষ পর্যন্ত তা ভেস্তে যায়(Junior doctor and Mamata Banerjee meeting)। এরপর এই সপ্তাহের প্রথম দিনেই ফের রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক করতে জুনিয়র ডাক্তারদের আলোচনার টেবিলে ডেকেছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। ইমেল করা হয় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের। মুখ্যসচিবের তরফে পাঠানো চিঠিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকার কথা উল্লেখ করে, ‘শেষ চেষ্টা’র কথা জানানো হয়।
মুখ্যসচিব জানান, ‘পঞ্চম এবং শেষবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আপনাদের প্রতিনিধিদের বৈঠকে ডাকা হচ্ছে। এর আগেও খোলা মনে বৈঠকের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাসভবনে ডাকা হয়েছিল আন্দোলনকারীদের। যেহেতু এটি সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন বিষয়, তাই কোনওভাবে লাইভ সম্প্রচার কিংবা ভিডিওগ্রাফি করা সম্ভব নয়। তবে দুপক্ষের সই করা বৈঠকের কার্যবিবরণী কিংবা মিনিটস শেয়ার করা সম্ভব। বিকেল পাঁচটায় বৈঠকের আগে, বিকেল চারটে পঁয়তাল্লিশ নাগাদ আগের দিনের বৈঠকে যোগ দিতে আসা প্রতিনিধিদের মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে(Junior doctor and Mamata Banerjee meeting) উপস্থিত থাকার অনুরোধ করা হচ্ছে। আশা করি, আপনাদের ইতিবাচক সাড়া পাব এবং এই বৈঠক ফলপ্রসূ হবে।’
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে ফের শুরু হতে চলেছে আরজি কর মামলার শুনানি। সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া হবে স্টেটাস রিপোর্ট। অন্যদিকে, হাসপাতালে নিরাপত্তা পরিকাঠামোর বিষয়ে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। পাশাপাশি আগামীকাল থেকে জুনিয়র চিকিৎসকদের হয়ে শীর্ষ আদালতে সওয়াল করবেন বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং। এখন সকলের নজর সেইদিকেই। সুপ্রিম কোর্টে তবে কি বিচার পাবেন তিলোত্তমা? জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধেই বা কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে শীর্ষ আদালত?