RG Kar Case: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। প্রধান বিচারপতির আশ্বাস, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি কোনোও কিছুর বিনিময়েই বিচার ও নিজেদের দাবির সঙ্গে আপোস করতে চাননি আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। সোমবার দেশের শীর্ষ আদালত জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে যোগ দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিলেও, তা অমান্য করেই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্বাস্থ্য ভবনের (swasthya bhawan abhijan) সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে বৈঠক ডাকা হলেও, সেখানে উপস্থিত হননি জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিদল।(RG Kar Case)
RG Kar Case স্বাস্থ্য ভবন অভিযান
আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনার বিচারসহ ৬ দফা দাবিতে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন অভিযান শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা(junior doctors protest)। লালবাজার অভিযানে ৫ দফা দাবিতে, প্রতীকী শিরদাঁড়া নিয়ে মিছিলের পর, এবার প্রতীকী মস্তিষ্ক হাতে নিয়ে ৬ দফা দাবিতে প্রতিবাদ করতে দেখা গেল চিকিৎসকদের। প্রতীকী মস্তিষ্ক হাতে প্রতিবাদের সাপেক্ষে জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের মাথা খাটিয়ে কাজ করার বার্তা দিতেই এই পদক্ষেপ। তবে এই মিছিল স্বাস্থ্য ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। স্বাস্থ্য ভবনের গেট বন্ধ থাকায়, রাস্তাতে বসেই নিজেদের দাবি জানালেন তাঁরা। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা পার হয়ে যাওয়ার পরেও নিজেদের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়লেন না জুনিয়র চিকিৎসকরা, যোগ দিলেন না কাজেও। পাল্টা তাঁরা জানিয়ে দিলেন, কোনো ডেপুটেশন জমা দিতে তাঁরা আসেননি, স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে কয়েকজনকে দাবি জানানোর সুযোগ না দেওয়া হলে লাগাতার অবস্থান চলবে। জারি থাকবে কর্মবিরতিও।
RG Kar Case জুনিয়র ডাক্তারদের ছয় দফা দাবি-
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন অভিযানে ছয় দফা দাবির কথা তুলে ধরেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
•আরজি কর মেডিকেল কলেজে মহিলা চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনার (rgkar case) সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিত করে, দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
•এই মামলায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রকাশ্যে আনতে হবে।
•কলকাতা পুলিশের কমিশনারের ইস্তফা।
•রাজ্যের সমস্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মজবুত করতে হবে।
•রাজ্যের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গুলিতে ভয় মুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুনিশ্চিত করতে হবে।
•রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিকর্তা, এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার পদত্যাগ।
আন্দোলনকারী ডাক্তারদের বৈঠকে ডাক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরোয়া না করে, মঙ্গলবারও জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে যোগ দিলেন না। এরপরই সন্ধ্যায় রাজ্য প্রশাসনের সদর দপ্তর নবান্ন থেকে আন্দোলনেরকারীদের বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ জানিয়ে ইমেইল করা হয়(RG Kar Case)। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ন স্বরূপ নিগম মেইল করে জানিয়েছিলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) চিকিৎসকদের জন্য বৈঠকের উদ্দেশ্যে নবান্নে(nabanna) অপেক্ষা করছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও স্বাস্থ্যসচিব নারায়ন স্বরূপ নিগম।’ ৬টা ১০ মিনিট নাগাদ এই মেইল করা হলেও, আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া না আসায়, নবান্ন থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই সাংবাদিক বৈঠক করে এই বিষয়টি জানান রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের আমন্ত্রণে কেন সাড়া দিলেন না আন্দোলনরত ডাক্তাররা?
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সাংবাদিক বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই অন্যদিকে সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে থেকে সাংবাদিক বৈঠক শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা(RG Kar Case)। তাঁরা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক সদর দপ্তর থেকে আসা মেইলটি ‘অপমানজনক’। জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে জানানো হয়েছে, ‘স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগ এই অভিযানের অন্যতম দাবি। কিন্তু তা সত্ত্বেও স্বাস্থ্যসচিবের মেইল থেকেই ইমেইল করা হয়েছে বৈঠকের জন্য। এতে আন্দোলনের স্পিরিট নষ্ট হচ্ছে।’
তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ‘ইমেইলে রেসপেক্টেড স্যার বলে উল্লেখ করা রয়েছে। কিন্তু আন্দোলনে শুধু স্যার নন, সামিল রয়েছেন ম্যাডামরাও। মেইলে জানানো হয়েছে, আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দল এখন সরকারের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে নবান্নে এসে দেখা করতে পারে।’ এই ‘এখন’ শব্দ নিয়েও তাঁদের আপত্তি। শুধু তাই নয়, প্রতিনিধি দলে ১০ জনের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছে। তাই তাঁরা নবান্নে যাননি(RG Kar Case)। অবস্থান বিক্ষোভ থেকে স্লোগান তুলে তাঁরা জানিয়েছেন, ‘ ন্যায় বিচার পাচ্ছি না, উৎসবে আর ফিরছি না’।
আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়েছেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে সদর্থক বার্তা এলে, আমাদের পাঁচটি দাবি মেটানো হলে এবং সমস্যার সমাধানের আশ্বাস পেলে সকলের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা বিষয়টি ভেবে দেখতে পারি। পরবর্তী পদক্ষেপ পরিস্থিতি অনুযায়ী স্থির করা হবে। তবে সারারাত ধরে অবস্থান-বিক্ষোভ জারি থাকবে।’ তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ‘ভবিষ্যতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠক হলে, দশজনের প্রতিনিধিদল নয়, সমস্ত মেডিকেল কলেজের প্রতিনিধিদল যাবে।’
Nice and Attractive