Nimisha Priya: কেরলের নার্স নিমিশা প্রিয়ার(Nimisha Priya Death Row)মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ার আগে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের শেষ চেষ্টা হলেও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাঁচানোর প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আর্টনি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমনি স্পষ্টভাবে জানান,” যতদূর সম্ভব ভারত সরকার চেষ্টা করছে। কিন্তু এখন আর কিছু করার নেই”।
৩৮ বছরে নিমিশা প্রিয়া ২০১৭ সালে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় তা ব্যবসায়িক অংশীদার তালাল আব্দো মাহাদিকে হত্যা করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। ২০২০ সালের ট্রায়াল কোর্টে তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। এবং ২০২৩ সালে হুতি প্রশাসন শীর্ষ আদালত এই রায় বহাল রাখে।
কেরালা (Kerala) কোচি(kochi) ইয়েমেন(Yemen)ও যুদ্ধকালীন কূটনীতি এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে আছে একাধিক জটিল বিষয়। যার মধ্যে সবচেয়ে বড় বাধা হলো ইয়েমেনের বর্তমান গৃহযুদ্ধ এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের অনুপস্থিতি ।ভারত সরকারের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে বলেন,” ইয়েমেনের প্রতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে ভারতের কোন আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই ।ফলের রাষ্ট্রীয় স্তরে কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না।”
তিনি আরো জানান, ইয়েমিনের এক প্রভাবশালী শেখের মাধ্যমে মধ্যস্থতাই চেষ্টা করা হয়েছিল। “আমরা অনানুষ্ঠানিকভাবে জানতে পেরেছি যে, মৃত্যুদণ্ড কিছু সময় জন্য স্থগিত রাখা হতে পারে ।কিন্তু এটা কতটা কার্যকর হবে তা নিশ্চিত নয়।”
আরও পড়ুন: Sneha Debnath এর করুণ পরিণতি signature bridge ঘিরে উঠছে প্রশ্ন
একমাত্র ভরসা ব্লাড মানি সেটেলমেন্ট (only option is blood money settlement)
ইসলামিক শরিয়া আইন অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীকে ক্ষমা করার অধিকার থাকে নিহত ব্যক্তির পরিবারের। যদি তারা আর্থিক ক্ষতিপূরণ বা ব্লাড মানি গ্রহণ করেন তবে মৃত্যুদণ্ড বাতিল হতে পারে। এই নিয়ম আপাতত নিমিশা প্রিয়া পরিবার ও সমর্থকদের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সেভ নিমিশা প্রিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকশন কাউন্সিল, নামে একটি নাগরিক গোষ্ঠী দাবি করেছে, নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে তারা যোগাযোগ রয়েছে এবং একটি উল্লেখযোগ্য অংকের ব্লাড মানি জোগাড় করা হয়েছে। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবার এবং হুতি প্রশাসন এখনো আলোচনায় রাজি হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ,”তারা বলছে এটা সম্মানের প্রশ্ন এখনই কিছু বদলাবে কিনা, বলা যাচ্ছে না।”
সুপ্রিম কোর্টের সীমাবদ্ধতা
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিক্রম নাথ ও সন্দীপ মেহেতা বলেন,” বিদেশী দেশের বিষয়ে আমরা কিভাবে আদেশ দেব ?সেটা কে মানবে?” মামলা পরবর্তী শুনানি ১৮ই জুলাই ধার্য হলেও, ততদিন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
এক মর্মান্তিক জীবনগাথা
নিমিশা প্রিয়া ২০০৮ সালে কেরল (Kerala)থেকে ইয়েমেনে(Yemen )যান অভাবে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে। বিভিন্ন হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করে পরবর্তীতে নিজের ক্লিনিক খোলেন ।ইয়েমেনি নাগরিক মাহদি ছিলেন তার স্থানীয় ব্যবসায়িক অংশীদার। যিনি পরে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে পাসপোর্ট ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে গিয়ে তিনি তাকে চেতনানাশক ইনজেকশন দেন যা অতিরিক্ত মাত্রায় হয়ে মৃত্যু ঘটে।
বর্তমানে নিমিষার মাপ প্রেমা কুমারী ইয়েমেন অবস্থান করছে কন্যার জন্য শেষ মুহূর্তের ক্ষমার আর্জি জানাতে ইয়েমেন যুদ্ধ ও কূটনৈতিক দুর্বিস্তার এই আবহে ভারতের সামনে কেবলমাত্র একটি রাস্তা খোলা -only option is blood money settlement অর্থাৎ নিহতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে ক্ষমা চাওয়া। এখন দেখার, মানবিকতা কতটা স্থান পায় হুতি প্রশাসনের বিচার পথে।