Test Cricket Match: সাম্প্রতিক কালে টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ (Test Cricket Match) চলছে ভারত এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে। আপনাদের জানিয়ে রাখি, ভারতের অধিনায়ক পদে নতুন বসেছেন শুভনম গিল। তাই এই ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই টেস্ট সিরিজটি (Test Cricket Match) ভারতীয় টিমের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সিরিজটি ভবিষ্যতের ভারতীয় টিমের রূপরেখা নির্মাণ করার ক্ষেত্রে এক বড় অবদান রাখবে। গতকাল, যেভাবে শুভমন গিল (Shuvnam Gill) আর যশস্বী জয়সওয়ালের মতো তরুণ ভারতীয় ক্রিকেটাররা ইংল্যান্ডের মাটিতে দাঁড়িয়ে, ব্রিটিশ বোলারদের বিরুদ্ধে দাপট দেখিয়েছে, তাতে একথা খুব স্পষ্টভাবেই বলা যায় যে, এই ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজটিও একেবারেই কাঁটায়-কাঁটায় হবে।
প্রথম দিনের সেঞ্চুরি টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচে( Test Cricket Match) :
ইংল্যান্ডের আগুনে বোলিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে কাল যেভাবে শুভমন গিল (Shuvnam Gill) আর যশস্বী জয়সওয়াল, উভয়েই যেভাবে দাপট দেখিয়ে নিজেদের সেঞ্চুরি পূরণ করলেন, তাতে অনেকের ধারণা হচ্ছে, এই তরুণ ভারতীয় ক্রিকেট টিমকে নিয়েও, ব্রিটিশ বোলারদের মাথা ঘামাতেই হবে।
টেস্ট ম্যাচে ( Test Cricket Match) অধিনায়ক হিসেবে প্রথম খেলা ভারতের :
সবেমাত্র অবসর গ্রহণ করেছেন বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মার মতো দুই অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন তরুণ তুর্কি শুভমন গিল (Turkey Shuvnam Gill). তাই এই ভারতীয় টিম যে ইংল্যান্ডের মাটিতে, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কতটা ভালো পারফর্ম করতে পারবে সেই নিয়ে সন্দিহান ছিলেন সকলেই। তার ওপর গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছিল জসপ্রীত বুমরার ফিটনেস।
কোহলি আর রোহিতের পর যদি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিরিজে বুমরাকেও না পাওয়া যায়, তাহলে ভারতীয় টিমের যে কি অবস্থা হবে তা হয়তো কল্পনাও করা যায়না। সমস্ত দুশ্চিন্তাকে সরিয়ে কাল দুর্ধর্ষ পারফর্ম করেছে ভারতীয় ক্রিকেট টিম। মাঠে নেমেছেন জসপ্রীত বুমরাও। আর এসমস্ত কিছুর মধ্যেই এই তরুণ ভারতীয় ক্রিকেট টিমকে নিয়ে,নিজের আশার কথা শোনালেন কিংবদন্তি ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন ডেভিড গোয়ার। পাশাপাশি জসপ্রীত বুমরাকেও দরাজ সার্টিফিকেট দিলেন তিনি।
আসুন দেখে নিন, নিজের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে তিনি ঠিক কোন কোন বিষয়ে কথা বললেন :
১. যে ভারতীয় ক্রিকেট টিমটি এইবারে ইংল্যান্ড সফরে আসছে, সেটি যথেষ্টই অনভিজ্ঞ টিম। আপনি কি মনে করেন এই টিমটি ইতিহাস রচনা করতে পারবে ?
ডেভিড গাওয়ার সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ” দেখুন আমরাও যখন অস্ট্রেলিয়া, ভারত বা অন্য কোনও সফরে যেতাম, তখন আমরাও যথেষ্ট নার্ভাস থাকতাম। কিন্তু আমরাও ইতিহাস রচনা করার মনোভাব নিয়েই যেতাম। দুইজন অভিজ্ঞ প্লেয়ার যখন দল থেকে বিদায় নেন, তখন দলে নিশ্চিতভাবেই কিছু অভিজ্ঞতার খামতি হয়ে যায়। কিন্তু সকলকেই সেই পরিস্থিতিতেও অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে নিতে হয়। আমার যতদূর মনে পড়ছে ইংল্যান্ডের মাটিতে, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত প্রথম টেস্ট সিরিজ জিতেছিল অজিত ওয়াদেকারের নেতৃত্বে। কিন্তু তারপর গত ২০-৩০ বছরে ভারত এখানে অনেকগুলি ভালো সিরিজ খেলেছে। বিরাট আর রোহিত না থাকায় ইংল্যান্ড কিছুটা বাড়তি সুবিধা পেলেও, এই সিরিজটি হালকার ওপর নিলে হবে না। “
২. এটা ক্যাপ্টেন হিসেবে শুভমন গিলের প্রথম টেস্ট সিরিজ। তাও সেটিও আবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। আপনার কি মনে হয় শুভমনের ওপর বাড়তি চাপ থাকবে ?
ডেভিড : দেখুন যেকোনও ক্যাপ্টেনকেই একটা বাড়তি চাপ নিতেই হয়। তবে শুভমনের ক্ষেত্রে একটা সুবিধা হল এই যে, ওর দলের সদস্যরা ওর সঙ্গে রয়েছে। ক্যাপ্টেনকেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কিন্তু এটা কোনও একক প্রক্রিয়া নয়। দলগত ভাবে দলের সবাইকেই ক্যাপ্টেনকে উৎসাহিত করতে হয়। শুভমন গিল ভারতের মাটিতে ভালো খেলে, তবে অস্ট্রেলিয়ায় ওর রেকর্ড খুব একটা ভালো হয়নি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কিভাবে খেলতে হবে, সেই মেথড ওকেই খুঁজে বের করতে হবে। আশা করি ও সফল হবে কারণ ও একজন ভালো ব্যাটসম্যান।
৩. এই সিরিজে গৌতম গম্ভীর ভারতীয় ক্রিকেট টিমের নতুন কোচ হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। আপনার কি মনে হয় গম্ভীরের সাথে শুভমনের রসায়ন কিরকম হতে পারে ?
ডেভিড : দেখুন কোচ আর ক্যাপ্টেনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে। একটা ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব হল প্রতিটি প্লেয়ারকেই তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া এবং সেগুলিকে কার্যকরী করা, আর তারসাথে পরিস্থিতি অনুযায়ী প্লেয়ারদের কাজে লাগানো। কাজেই কোচ আর ক্যাপ্টেনের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকলে এই কাজটি করতে সুবিধা হয়। মাঠের মধ্যে ক্যাপ্টেনকেই সমস্ত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তাই শুভমনকেও একজন লিডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
৪. জসপ্রীত বুমরা তো পাঁচটি খেলায় উপস্থিত নাও থাকতে পারেন। আপনার কি মনে হয় বুমরাকে ঠিক কিভাবে ব্যবহার করা উচিত ? ওকে প্রথম থেকেই খেলানো উচিত না পরের দিকের ম্যাচগুলির জন্য অপেক্ষা করা উচিত ?
ডেভিড : দেখুন আমি যদি এইসময় ইংল্যান্ড টিমে থাকতাম তাহলে আমি চাইতাম ও না খেলুক (মৃদু হেঁসে)। আসলে বুমরা একজন ওয়ার্ল্ড ক্লাস প্লেয়ার। ওকে পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজে লাগাতে হবে। যেখানে ওকে সবথেকে বেশি প্রয়োজন, ওকে সেখানেই কাজে লাগাতে হবে। যেহেতু ইংল্যান্ডের পিচ বোলিং সাপেক্ষ নয়, তাই বুমরাকে খুব প্ল্যানিং করে কাজে লাগাতে হবে। তবে বুমরা যদি ৭০-৮০ শতাংশও ফিট থাকে,তাহলেও আমি ওকে সবসময় আমার টিমে চাইতাম। কারণ ও সেরা।
৫. ভারতের বিরুদ্ধে আপনার সবথেকে স্বরণীয় মুহূর্ত কোনটি ?
ডেভিড : অবশ্যই আমি যখন ১৯৮৪-৮৫ সালে ইন্ডিয়ায়,ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জিতেছিলাম। ওই সিরিজটি যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল আমাদের কাছে। সুনীল গাভাস্কার, কপিল দেবের মতো প্লেয়ারদের বিরুদ্ধে খেলাটা চাট্টিখানি কথা নয়।
৬. কি মনে হয় এই সিরিজটি কে জিতবে ?
ডেভিড : দেখুন হোম অ্যাডভান্টেজ, ইন্ডিয়ার তারুণ্যে ভরপুর টিম, এগুলিকে মাথায় রেখে মনে হচ্ছে এই সিরিজের ফলাফল ৩-১ হতে চলেছে (আবার মৃদু হেসে) । তবে সত্যি কথা বলতে খেলায় কি হবে সেটা কেউই বলতে পারে না।
