Tollywood Industry Lack of work 2025: টলিউডের কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় ক্রমশই মুম্বাই মুখি হচ্ছেন বাঙালি অভিনেতারা। ইন্ডাস্ট্রির এই পরিবর্তনশীল বাস্তবতায় যেন নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে, বলিউডের প্রখ্যাত কাস্টিং ডিরেক্টর মুকেশ ছাবড়ার (Mukesh Chaabra) কলকাতায় আশা ঘিরে ।
সুশান্ত সিং রাজপুত (Sushant Singh Rajput) এর মত তারকাকে আবিষ্কার করেই যিনি বলিউডে নিজের আলাদা পরিচিতি গড়েছেন,যে সেই মুকেশ এবার নতুন মুখের খোঁজে (Tollywood Industry Lack of work 2025) আয়োজন করছেন এক কর্মশালার।
কবে হচ্ছে অনুষ্ঠান? (Tollywood Industry Lack of work 2025)
আগামী ১২ ই জুলাই কলকাতার এক স্টুডিও ওই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে তিন ঘন্টার এই বিশেষ ক্লাস ।শুধুমাত্র পেশাদার অভিনেতা নয় ,যে কেউ এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ নিতে পারবেন। তবে ইতিমধ্যে টলিপাড়ার একাধিক পরিচিত মুখ যেমন টোটা রায় চৌধুরী, দেবলীনা দত্ত, দেবদূত ঘোষ ও দেবজ্যোতি দত্ত এই কর্মশালায় আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আরো পড়ুন : গালওয়ান যুদ্ধ কাহিনী নিয়ে সালমান খান! রক্তাক্ত টিজারে ভাইজান ঝড় তুললেন নেটমাধ্যমে
কী বলছেন স্টুডিও’ র কর্ণধার? (Tollywood Industry Lack of work 2025)
স্টুডিওর কর্ণধার প্রীতিময় চক্রবর্তীর (Preetimoy Chakraborty) মতে, “অনেক বাঙালি অভিনেতা মুম্বাইয়ের কাজ করতে চান। কিন্তু উচ্চারণ ও ভাষাগত কিছু সমস্যায় তারা পিছিয়ে পড়েন। সেই বাধা দূর করতে, আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও অডিশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিতে এই কর্মশালা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ”।
এখানেই শেষ নয়, ইটানগরের এসআর এফটিআই( Itanagar ESR EFTI) থেকেও অনেকে অংশ নিতে আসছেন বলে জানা গিয়েছে। কলকাতা থেকেই বলিউডের নতুন মুখ পাওয়া সম্ভব না থাকায় এই কর্মশালার গুরুত্ব আরো বাড়ছে (Tollywood Industry Lack of work 2025).
বিগত কয়েক বছরে কারা টলিউড ছেড়ে বলিউডে গেছেন? (Tollywood Industry Lack of work 2025)
গত কয়েক বছরে টলিউড থেকে বলিউডে (Tollywood to Bollywood) যাত্রা করছেন একাধিক পরিচিত নাম -শ্বশ্বত চট্টোপাধ্যায় (Saswata Chatterjee), যীশু সেনগুপ্ত (Jishu Sengupta), পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় (Parambrata Chatterjee), এমন কি সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) ও বর্তমান সময়ের সুপারস্টার জিৎ ও (Jeetendra Madnani).
ছোটপর্দার বহু অভিনেতা অভিনেত্রী ও এখন হিন্দি ধারাবাহিক জায়গা পাওয়ার চেষ্টায় মুম্বাইয়ে পাড়ি দিচ্ছেন। এর নেপথ্যে যে টলিউডের কাজের পরিসর কমে যাওয়া অন্যতম কারণ ।তা একাধিক অভিনেতার বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার।
অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত (Debolina Dutta) জানান, এক সময় কলকাতায় কাজের পরিবেশ যথেষ্ট ছিল। কিন্তু এখন সুযোগ কমে এসেছে (Tollywood Industry Lack of work 2025). তার ওপর নবাগতদের নিয়ে কাজ করার উৎসাহতেও তেমন দেখা যায় না। পরিবর্তে স্বজনপোষনই বেশি চোখে পড়ে।”
“তিনি আরো বলেন, এই পরিস্থিতিতে বলিউডের মত বড় ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুযোগ পেতে গেলে আমাদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জরুরী। মুকেশ ছাপড়া মতো প্রথম সারির কাস্টিং ডিরেক্টরের কর্মশালা থেকে শেখার সুযোগ অবশ্যই পাওয়া উচিত।”
অভিনেতা দেবদূত ঘোষ (Actress Deb Dut Ghosh) মনে করেন, “একসময় টেলিভিশনের ৪০-৫০ টি ধারাবাহিক চলত, এখন সংখ্যাটা কুড়ির ঘরে, ছবির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। প্রযোজনা ও বিনিয়োগ উল্টো হ্রাস পেয়েছে। ফলে নতুন প্রজন্মের অভিনেতারা মুম্বাইয়ের মতো বড় প্ল্যাটফর্ম খুঁজে নিচ্ছেন।”
তবে দেবদূতের মতে, মুম্বাইয়ের পাশাপাশি দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি ও বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগেও বাংলা চলচ্চিত্রের সুযোগ বাড়তে পারে। “আমাদের উচিত বহুভাষিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলা ছবির বাজার প্রসারিত করা। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এলে বাংলাদেশকেও সঙ্গে নিয়ে সিনেমা আদান প্রদান বাড়ানো যেতে পারে।”
সব মিলিয়ে মুখে ছাবড়ার কর্মশালা যেন হয়ে উঠেছে টলিউডের বাস্তব চিত্রের প্রতিফলন- কাজ কমছে, মঞ্চ বদলাচ্ছে, তবে প্রতিভা তৈরি ও বিকাশের চেষ্টায় আশার আলো এখনো জ্বলছে।
কিন্তু বর্তমানে টলিউডে এরূপ অবস্থা কেন?
এই সময় দাঁড়িয়ে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে নানান উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। একটা সময় এই ইন্ডাস্ট্রি রমরমিয়ে ব্যবসা করলেও চলচ্চিত্র নির্মাণ এখন অনেক সমস্যার মুখে পড়েছে।
এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, চলচ্চিত্র নির্মাণে অর্থায়ন কমে আসার কারণে বিভিন্ন প্রযোজক এই ইন্ডাস্ট্রি থেকে পিছিয়ে আসছে। এছাড়াও কারোর কারোর মত, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ।
রাজনৈতিক বিভাজন শিল্পী এবং পরিচালকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে দিয়েছে। আরও একটি দিক হলো, ভালো গল্পের মানসম্মত অভাব। যেকারণে সিনেমা হল গুলোতে অনেকটাই জনপ্রিয়তা কমিয়ে দিয়েছে। দর্শকও সে মাত্রায় কমেছে।
এবার অনেকে তাকিয়ে আছে, আগামী দিনে নতুন পরিচালক এবং শিল্পীরা কী এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে ইন্ডাস্ট্রি? সেটার দিকেই তাকিয়ে এক প্রকার বলা যেতে পারে, বাংলার পুরো কমিউনিটি। আজকের মতন এই টুকুই , দেখা হচ্ছে অন্য কোন খবরে।