Education Depts Unprecedented Move: সম্প্রতি স্কুল শিক্ষা দফতর একটি নির্দেশ জারি করেছে, যেখানে একজন লাইব্রেরিয়ান সামলাবেন দুই সরকারি স্কুল যথাক্রমে হিন্দু স্কুল ও বালিগঞ্জ সরকারি বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার। শিক্ষা দফতরের তরফে জারি হওয়া এহেন নির্দেশিকায় শিক্ষকমহলের একাংশ রীতিমতো হতবাক। শিক্ষক সংগঠনগুলিও এই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত।
আসল ব্যাপারটা কী? (Education Depts Unprecedented Move)
রাজ্যে এখন সরকারি স্কুলের সংখ্যা ৪১টি, এর মধ্যে ৩১ স্কুলে রয়েছে গ্রন্থাগার এবং মাত্র ৪টি স্কুলে রয়েছেন গ্রন্থাগারিক, বাকি ২৭টি পদ শূন্য। রাজ্যের সরকারি স্কুলের গ্রন্থাগারগুলিতে দীর্ঘ ১১ বছর যাবৎ কোনো গ্রন্থাগারিক নিয়োগ না হওয়ায় গ্রন্থাগার গুলি দেখভাল নিয়ে সমস্যা হয়েছে। তাই এবার সরকারি নির্দেশে গ্রন্থাগারগুলির দেখাশোনার সমস্যা সমাধান করতে এক জন গ্রন্থাগারিক সামলাবেন দুইটি স্কুলের গ্রন্থাগার। জানা গেছে যে, হিন্দু স্কুলে কর্মরত গ্রন্থাগারিক জিষ্ণু ভট্টাচার্যকে হিন্দু স্কুলের পাশাপাশি এবার বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুলের গ্রন্থাগারেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাকে সপ্তাহে তিন দিন বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুলে গিয়ে গ্রন্থাগার পরিচালনা করতে হবে বলে নির্দেশিকা জারি করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, জিষ্ণু ভট্টাচার্য প্রতি সপ্তাহে সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার হিন্দু স্কুলের গ্রন্থাগার এবং বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুলের গ্রন্থাগার দেখভাল করবেন। তবে, এক জন গ্রন্থাগারিককে একসঙ্গে দুইটি স্কুলের গ্রন্থাগারের দায়িত্ব দেওয়ায় শিক্ষকমহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। একজনের হাতে দুই টি স্কুলের দায়িত্ব থাকায় কোনোটাই যথাযথ ভাবে চলবে কি না তা নিয়ে রীতিমতো আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিক্ষকমহল।
আরও পড়ুন: “মাত্র ১৪৯৯০ টাকায় ৬৬০০mAh ব্যাটারি ও ৫০MP ক্যামেরা! বাজার মাতাতে আসছে Meizu Note 22”
উঠছে প্রশ্ন(Education Depts Unprecedented Move)
শিক্ষা দফতরের এহেন সিদ্ধান্তে শিক্ষক সংগঠনের একাংশ তুলেছেন প্রশ্ন। প্রধানশিক্ষক ও শিক্ষিকা সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে লাইব্রেরিয়ান, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষক- শিক্ষিকা ও প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ নেই। যার ফলে এই সমস্যা হচ্ছে, কিন্তু এই দিয়ে সমস্যার সমাধান করা যাবে না। সরকার নতুন করে স্কুলগুলিতে শিক্ষক, গ্রন্থাগারিক নিয়োগ করতে না পারায়, একজনকে বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। অবিলম্বে পিএসসি-র মাধ্যমে সরকারি স্কুলে যেমন নিয়োগ হয় তেমন নিয়োগ করতে হবে। লাইব্রেরির বই এর জন্য গ্রান্ড আসছে, কিন্তু আসবাবপত্রের জন্য গ্রান্ড আসছে না। লাইব্রেরির জন্য একজন লাইব্রেরিয়ান লাগে সেই পোস্টগুলো শূন্য। অবিলম্বে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ করা হোক।”(Education Depts Unprecedented Move)
শুরু হয়েছে বিতর্ক
শিক্ষা দফতরের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। শিক্ষকদের একাংশ সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ‘‘২০১৪ থেকে ২০১৫ সালে শেষ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে ১৪টি স্কুলে শূন্যপদের জন্য গ্রন্থাগারিক নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল। ছয়টি স্কুলে নিয়োগ হয়েছিল। তার পরে আর কোনও নিয়োগ হয়নি। এ ভাবে একজন কর্মী যদি দুইটি জায়গায় কাজ করেন, তাহলে কোনো গ্রন্থাগারই ঠিক মতো চলবে না। শিক্ষা দফতরের এহেন সিদ্ধান্তের ফলে উভয় স্কুলেই গ্রন্থাগারের মান তলানিতে পৌঁছবে। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই, অবিলম্বে নিয়োগ প্রয়োজন।’’(Education Depts Unprecedented Move)
উল্লেখ্য, শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, “একটি স্কুলে গ্রন্থাগারিক আছে অপর স্কুলটিতে গ্রন্থাগারিক না থাকায়, পড়ুয়াদের সুবিধার্থে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আমরা পিএসসির মাধ্যমে শূন্যপদে নিয়োগের জন্য আবেদন করেছি।”