Kojagori Lakshmi Puja 2025: দুর্গাপুজোর সমাপ্তির পর বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় আর এক শুভ উৎসব কোজাগরি লক্ষ্মীপুজো। আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় এই পুজো। এই দিনে গৃহস্থ পরিবারের সমৃদ্ধি, ধন-ধান্য ও শান্তির জন্য পতিত হন স্ত্রী ও সম্পদের দেবী মা লক্ষ্মী। বিশ্বাস করা হয়, সঠিক নিয়মে কোজাগরি পূর্ণিমার রাতে দেবীর আরাধনা করলে সংসারে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটে এবং সর্বপ্রকার অভাব দূর হয়।
কোজাগরী পূর্ণিমার মাহাত্ম্য
‘কোজাগরী’ শব্দের অর্থ ‘কে জাগে রে’। পুরান কথা অনুসারে, আশ্বিনী পূর্ণিমার রাতে মা লক্ষ্মী স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন। তিনি প্রত্যেক গৃহে গিয়ে দেখেন কারা জেগে তার আরাধনা করছে। যারা জেগে পুজো করেন, তাদের গৃহে লক্ষ্মীচরণ পরে এবং সেই পরিবার ধন-সম্পদের সমৃদ্ধ হয়। তাই এই পুজোই সারারাত জেগে দেবীর নাম স্মরণ ও আরাধনা করার রীতি আজও প্রচলিত।
২০২৫ সালে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার তারিখ ও সময়
এবছর কোজাগরী লক্ষ্মীপূজো অনুষ্ঠিত হবে ৬ অক্টোবর, সোমবার।
- পূর্ণিমা তিথির শুরু: ৫ অক্টোবর রবিবার রাত ১২:২৩ মিনিটে
- পূর্ণিমা তিথি শেষ: ৭ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৯:১৬ মিনিটে
অর্থাৎ 6 অক্টোবর সোমবার সূর্যোদয় থেকে শুরু করে অহোরাত্র জুড়ে থাকবে পবিত্র পূর্ণিমা তিথি। ফলে এই দিনই পালন করা হবে কোজাগরী লক্ষী পূজো।
পূজোর শুভ মুহূর্ত
কোজা করি পূজোই বিশেষত সন্ধ্যা বেলায় বা প্রদোষ কালী দেবীর পূজা করা হয়। তবে অনেক পরিবারে রাত্রি জেগে রাতভর মা লক্ষ্মীর আরাধনা করার রীতি রয়েছে। এদিন বাড়ি পরিষ্কার করে, আলপনা দিয়ে, প্রদীপ জ্বালিয়ে ও নানা ভোগ নিবেদন করে দেবীকে আহবান করা হয়।
পুজোর আচার বিধি
- বাড়ি পরিস্কার রাখ: মা লক্ষ্মী শুচিতা ভালোবাসেন। তাই ঘরদোর ঝকঝকে রাখা আবশ্যক।
- আলপনা ও প্রদীপ: দরজা ও পুজোরস্থানের ধান পদ্মফুল ও শঙ্খ আঁকা আলপনা দেওয়া হয়। প্রদীপ জ্বালিয়ে সমগ্র বাড়ি আলোকিত করা হয়।
- ভোগ নিবেদন: নারকেল, কলা, মিষ্টি, দুধ ও নানা রকমের ফল নিবেদন করা হয়।
- রাত জাগরণ: দেবীর আরাধনার সময় গল্প কীর্তন পাঠ ও নাম কীর্তন করে জেগে থাকার প্রথা প্রচলিত।
সামাজিক দিক
কোজাগরী পূর্ণিমা কেবল পূজোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এই দিনে বাংলার নানাস্থানে কীর্তন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও হরি কীর্তনের আয়োজন করা হয়। গ্রামীন এলাকায় অনেক জায়গায় লোকমেলাও বসে। এই উৎসব সামাজিক সম্প্রীতিরও প্রতীক।
আরও পড়ুন: দীপাবলীর আগে সোনার দাম পড়বে? বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস ও বিশ্লেষণ
দেবীর আশীর্বাদে সমৃদ্ধি
বিশ্বাস করা হয়, যারা নিষ্ঠার সঙ্গে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজো করেন, তাদের সংসারে ধন-সম্পদের অভাব থাকে না। মা লক্ষ্মীর কৃপায় জীবনে শান্তি ও অন্য বস্ত্রের নিশ্চয়তা আসে। এই কারণেই বাঙালি পরিবারে পূর্ণিমার রাতভর এই পুজো ভক্তি ভরে পালিত হয়।
দুর্গাপুজোর আনন্দময় বিদায় লগ্নে হাজির হয় কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। ২০২৫ সালে এই পুজো হবে ৬ অক্টোবর সোমবার। রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া পূর্নিমা মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত চললেও সোমবার দিনভর থাকবে পূর্ণিমা তিথি। এই শুভক্ষণে দেবী লক্ষীর আরাধনা করলে সংসারের ধন-সম্পদের বৃদ্ধি ঘটে এবং জীবনে আসে সৌভাগ্য ও শান্তি।