Bank Money Safety RBI DICGC Rules: চলতি সময় বেশিরভাগ মানুষই তাদের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যাংকে জমা রাখেন। সঞ্চয় নিরাপদ জায়গায় হিসেবে ব্যাংকের ওপর দেশের সাধারণ মানুষের আস্থা দীর্ঘদিনের। কিন্তু প্রশ্ন হল যদি কোনো কারণে ব্যাংক হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় বা দেউলিয়া ঘোষণা হয় তাহলে গ্রাহকের টাকাগুলোর কি হবে? সমস্ত অর্থ কি ফেরত পাওয়া সম্ভব?
আসলে ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেলে বা দেউলিয়া হলে গ্রাহকের সমস্ত আমানত নিরাপদ থাকে না। তবে গ্রাহকদের লোকসান যাতে একেবারে না হয়, তার জন্য ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) এবং ডিপোজিট ইন্সুরেন্স এন্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন (DICGC) কিছু বিশেষ নিয়ম নির্ধারণ করেছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, অতিগ্রাহক সর্বাধিক পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিমা সুরক্ষা (Insurance cover) পান।
৫ লক্ষ টাকার বীমা কভার কিভাবে কাজ করে?
RBI এবং DICGC এর নিয়ম অনুযায়ী, কোন গ্রাহকের একটি ব্যাংকে থাকা সমস্ত ধরনের জমা সঞ্চয়ী (SAVINGS ACCOUNT) চলতি (current account) স্থায়ী (fixed deposit) আমানত বা রিকারিং (recurring deposit) ডিপোজিট সবমিলিয়ে মোট ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুরক্ষিত বলে ধরা হয়। যদিও কারুর এক ব্যাংকে মোট ১০ লাখ টাকা জমা থাকে এবং সেই ব্যাংক হঠাৎ দেউলিয়া হয়ে যায়, তাহলে তিনি সর্বাধিক 5 লক্ষ টাকার বীমা কভার পাবেন। অবশিষ্ট অর্থের জন্য ব্যাংকের সম্পদ বিক্রির প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করতে হবে, যা দীর্ঘ সময় নিতে পারে।
ব্যাংক দেউলিয়া হলে কি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে?
যদি কোন ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যায় বা সেটি বন্ধ করে দেয়, তাহলে RBI বা DICGC সেই ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রক্রিয়া শুরু করে। ব্যাংকের গ্রাহকদের জানানো হয় যে তাদের দাবি জমা দিতে পারেন। এই দাবি অনলাইন বা অফলাইন উভয় পদ্ধতিতে জমা দেওয়া যায়। গ্রাহককে তার একাউন্ট সম্পর্কিত নথি ও পরিচয় পত্র জমা দিতে হয়। দাবি সত্যতা যাচাইয়ের পর, DICGC গ্রাহককে তার বীমার পরিমাণ ফেরত দেয়।
কারাই সুবিধা বিমা পাবেন
এই বিমা সুরক্ষা কেবলমাত্র ভারতের অনুমোদিত ব্যাংক গুলির গ্রাহকদের জন্য প্রযোজ্য। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত
- সরকারি ব্যাঙ্ক(public sector bank)
- বেসরকারি ব্যাঙ্ক (private bank)
- সমবায় ব্যাঙ্ক(co-operative Bank)
- ক্ষুদ্র ব্যাঙ্ক ও পেমেন্ট ব্যাঙ্ক(Small & Payments Bank)
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
অর্থ বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, যাদের ব্যাঙ্কে বড় অংকের আমানত রয়েছে, তাদের উচিত চাকাটি বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ভাগ করে রাখা। এতে ঝুঁকি কমে যায়। যেমন, যদি কেউ ১৫ লক্ষ টাকা জমা রাখতে চান, তাহলে তিনি ব্যাংকে ৫ লক্ষ করে রাখলে প্রত্যেক অ্যাকাউন্টে ৫ লক্ষই বিমা সুরক্ষার আওতায় থাকবে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- প্রতিটি গ্রাহকের জন্য ৫ লক্ষ পর্যন্ত আমানত বীমা সুরক্ষিত
- সেভিংস, কারেন্ট,FD ,RD মিলিয়ে মোট পরিমানে এই সীমা প্রযোজ্য
- ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হলে DICGC বিমার অর্থ ফেরত দেয়।
- বড় অংকের সঞ্চয় বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ভাগ করলে রাখলেই নিরাপত্তা বাড়ে।
ব্যাঙ্কে টাকা রাখা এখন নিরাপদ, তবে সচেতনতা জরুরি। নিজের সঞ্চয়ের সুরক্ষায় এই নিয়মগুলি জানা থাকাই বড় ভালো।