Modi Xi Jinping Meeting: দীর্ঘ ৭ বছরের অপেক্ষার পর প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী চিন সফরে। সাং হাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন সামিটে যোগ দিতে গিয়ে তিনি দ্বৈপাক্ষিক বৈঠক করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সঙ্গে। শনিবার প্রায় পঞ্চাশ মিনিট ধরে জলে দুই রাষ্ট্র প্রধানের এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বাস, সম্মান এবং পারস্পারিক সহযোগিতার ভিত্তিতে ভারত ও চীনের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন দুই দেশেরই রাষ্ট্রপ্রধান। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে এই সাক্ষাৎ। কারণ বেশ কয়েক বছর ধরে সীমান্তে অচলাবস্থা এবং বাণিজ্যিক টানা পড়েন ভারত চীন সম্পর্ককে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছিল।
কাজান বৈঠকের প্রসঙ্গ
বৈঠকে শুরুতে প্রধানমন্ত্রী Modi এবং প্রেসিডেন্ট Xi Jinping গত বছরের কাজান বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। দুই নেতাই এক বাক্যে জানান কাজান বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছিল এবং তারপর থেকেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ইতিবাচক দিকে এগিয়েছে। এবারও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আলোচনার মূল বিষয় হয়ে উঠে এলো সীমান্তের স্থিতিশীলতা, সেনাবাহিনী প্রত্যাহার, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি।
সীমান্ত ও পারস্পারিক আস্থা
মোদি বৈঠকে বস্ত্র জানান ভারত চীন সম্পর্ক পারস্পারিক বিশ্বাস ও সম্মানের ভিত্তিতে টিকে থাকতে পারে। এই বিশ্বাসকে দৃঢ় করার জন্য সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। তিনি আরো বলেন দুই দেশের মধ্যে বিশেষ চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে যা সীমান্ত ইস্যু সমাধান সহায়ক হবে। সীমান্তী সেনা কমানো এবং উত্তেজনা প্রশমনের দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছে বলেও তিনি জানান।
জনগণের স্বাস্থ্য ও কল্যাণ
মোদির কথায় ভারত ও চীনের সম্পর্ক দৃঢ় হলে শুধু দুই দেশ নয় বিশ্বেরও মঙ্গল হবে। তিনি বলেন, “আমাদের পারস্পারিক সম্পর্ক ও সংহতির ওপর ভারত এবং চীনের ২০৮ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য জড়িয়ে রয়েছে। এ সম্পর্কে সারা বিশ্বের কল্যাণ হবে। পারস্পরিক বিশ্বাস সম্মান ও সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে আমরা এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।”
সহযোগিতার নতুন দিক
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আরো কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা পুনরায় শুরু হওয়া দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়া এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়কে জোর দেওয়ার মতো বিষয়ে বৈঠকে আলোচনায় আসে। এর পাশাপাশি যখন আমেরিকা ভারতের পণের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল, তখন চীন ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল বলেও উল্লেখ করেন মোদি।
জিনপিং এর বার্তা
অন্যদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভারত চীন সম্পর্ককে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক’ করার উপর জোর দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ভারত ও চীন বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দুই দেশ এবং গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাই এই দুই দেশ একসঙ্গে এগোলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। কূটনৈতিক ভাষায় তিনি বলেন, ‘ড্রাগন’ এবং ‘হাতি’ যদি একত্রে আসে তবে বৈশ্বিক দক্ষিনের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতায় তা বড় ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: দশম শ্রেণীতে ফেল থেকে IPS অফিসার ঈশ্বর গুর্জরের অনন্য সাফল্যের কাহিনী
কূটনৈতিক গুরুত্ব
বিশেষ শব্দের মতে Modi Xi Jinping বৈঠক ভবিষ্যতের ভারত চীন সম্পর্কে নতুন দিশা দেখাতে পারে সীমান্তে দীর্ঘদিনের অচল অবস্থা মেটানোর পাশাপাশি বাণিজ্য ও কৌশলগত ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে বৈশ্বিক মঞ্চে এই সম্পর্ক নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে। যেখানে ভারত ও চীন মিলে গ্লোবাল সাউথের নেতৃত্বে বড় ভূমিকা পালন করবে।
সব মিলিয়ে প্রায় এক ঘন্টার এই বৈঠক শুধু SCO সামিটের প্রেক্ষিতেই নয় বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাস ও বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। বিশ্বাস, সম্মান ও পারস্পারিক সহযোগিতার ভিত্তিতে ভারত – চীন সম্পর্ক এগোতে শুরু করেছে এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।