অভিনেতারা: আমির খান, ডলি আহলুওয়ালিয়া, গুরপাল সিং, জেনেলিয়া দেশমুখ, সিমরান মঙ্গেশকর, আয়ুষ ভানসালি, সম্বিত দেশাই, ঋষভ জৈন, আশীষ পেন্ডসে, ঋষি শাহানি, নমন মিশ্র, বেদান্ত শর্মা, আরুশ দত্ত, গোপী কৃষ্ণন বর্মা(Sitare Zameen Par)
পুনঃ প্রদর্শন তারিখ | শুক্রবার, ২০শে জুন |
পরিচালক | আর.এস. প্রসন্ন |
চিত্রনাট্য | দিব্য নিধি শর্মা |
সময়কাল | ২ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট |
রেটিং | ৪.৮/৫ |
দর্শনীয় সব বয়সের জন্য, বিশেষ করে অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য অবশ্যই দেখা উচিত।
আমির খানের নস্টালজিয়া কে উপেক্ষা করা বড়ই কঠিন ।বহু ভালো ভালো ছবি উপহার দিয়ে তিনি মন কেড়েছেন আমজনতার। তার ছবি প্রতিবারই নতুন কিছু বার্তা দেয় সমাজের উদ্দেশ্যে।। তিনি একাই একটি প্রচার মাধ্যমের মতো কাজ করেন। তিনি স্ট্রিমিং মডেলকে এড়িয়ে চলেন এবং প্রেক্ষাগৃহের সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতার পক্ষে কথা বলেন। তিনি নিজের ব্যর্থতা ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলে থাকেন। যখন সারা ইন্ডাস্ট্রি জুড়ে চলছে জাতীয়তাবাদী উন্মাদনা অতিরঞ্জিত সুপারস্টার নির্ভর ব্লকবাস্টার ও ফ্রান্স চাইইজ ভিত্তিক অর্থ উপার্জনের ধারা। তখন তিনি একটি সাধারণ স্পোর্টস কমেডি ড্রামায় প্রযোজক এবং অভিনেতা হিসেবে যুক্ত হয়েছে যেখানে এক বেপথু ও বাস্কেটবল কোচ একটি নিউরো ড্রাইভারজেন্ট প্লেয়ারদের কে দলকে জাতীয় টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুত করে।
এবার আমির খানের উল্লেখযোগ্য এক সিনেমা “সিতারে জামিন পার”আবারো পুনরায় রিলিজ হতে চলেছে সিনেমা হলে।
সকলকে স্বাগত জানাই আজকের নতুন প্রতিবেদনে আজকে আমাদের প্রতিবেদনটি অন্য দিয়ে তুলনায় একটু অন্যরকম আজকে আমরা আপনাদের সামনে এই ছবি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তুলে ধরবো।
আমির খানের পরিচালনায় ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি চলচ্চিত্র তারিখ একটি অসাধারণ মানবিক গল্প। যা শিশুদের মানসিক বিকাশ শৈশবে জটিলতা ও শিক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা কে স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করেছে। এটি শুধুমাত্র একটি সিনেমা নয় বরং এক সামাজিক বার্তা।
আরও পড়ুন: বিনোদন
গল্পের কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে আট বছর বয়সী ঈশান আউয়াস্তি যে কিনা পড়াশোনায় লেখা লিখিতে সমস্যা হয় এবং কারোর কথাই মনোযোগ দিতে পারেনা। তার এই আচরণকে অনেকে অলসতা বা অবাধ্যতা বলে মনে করে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঈশান ডিসলেক্সিয়া নামক এক নিউরোলজিক্যাল সমস্যায় ভুগছে ।তার কল্পনা শক্তি প্রবল সে ছবি আঁকতে ভালোবাসে কিন্তু পাঠ্য বইয়ের বর্ণ তাকে বিভ্রান্ত করে সমাজ ও পরিবার তাকে অসফল বলে মনে করে ।এবং শেষ পর্যন্ত তাকে বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়ে দেয়।।
এই গল্পের মোর আসে যখন স্কুলে নতুন আর টিচার হিসেবে আগমন ঘটে, রাম শঙ্কর নিকুম্ব অর্থাৎ আমির খানের তিনি শিশু মনের গভীরতা বোঝেন এবং খুব দ্রুত ঈশানের সমস্যার মূল কারণটি ধরতে সক্ষম হয়। তিনি ধৈর্য ও মমতার মাধ্যমে ঈশানের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনে ।এই অংশটি চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় আবেগপ্রবণ ও শক্তিশালী।
সিতারে জমিন পার(Sitare Zameen Par) সিনেমাটির শুধু এক বিশেষ শিশুর গল্প নয়, বরং এটি প্রতিটি শিশুর কথা বলে ।যে শিশুটি হয়তো নিজের মতো করে চিন্তা করে সমাজের বাঁধাধরা ছকে চলতে পারে না, কিন্তু তার মধ্যেও এক অমূল্য প্রতিভা রয়েছে। আমির খান অত্যন্ত সংবেদনশীল ও মমতাময় ভাবে এবারটা সমাজের কাছে উপস্থাপন করেছেন।
অভিনয়ে দর্শিল সাফারি পারফরম্যান্স ঈশান চরিত্রে এক কথায় অনবদ্য। তার চোখের অভিব্যক্তি ভয়ের চিহ্ন আনন্দের উচ্ছাস সবই বাস্তব মনে হয়। আমির খান সম্ভবতই দক্ষ কিন্তু এই সিনেমায় তিনি অভিনেতার চেয়ে পরিচালক হিসেবে বেশি আলো ছড়িয়েছে। সাউন্ড ট্র্যাক যেমন “মা”,”জমি ওসি” এইসব গান আবেগকে উসকে দেয়। সান্তনু মৈত্রের সুর ও প্রসুন জোশির কথা হৃদয়ে গেঁথে দেয়।
এই ছবিটি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রশ্ন করে পরীক্ষার ফলাফলের বাইরে কি শিশুর আর কোন মূল্য নেই? প্রতিভার পরিচয় কি কেবল অঙ্কের নাম্বারে ধরা পড়ে? ছবিটি দেখামাত্রই বারবার এই প্রশ্ন মানুষের মনের কোনায় উঁকি দেয়।
সব নিলি তারই জামিন পার একটি মন ছুয়ে যাওয়ার ছবিটা চোখে জল আনি মনে প্রশ্ন তুলে এবং আমাদের এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয় শিশুদের প্রতি বাংলা ভাষায় বললে এই ছবিটি এক অনুপম শিল্পকর্ম ও যা হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
“সিতারে জামিন পার”(Sitare Zameen Par) শুধু একটি সিনেমা নয় ,এটি একটি অনুভব একটি বার্তা প্রতিটি শিশুর জন্য ভালোবাসা সহানুভূতি ও বোঝাপড়ার আহ্বান। যখন আমরা প্রযুক্তি আর প্রতিযোগিতার দৌড়ে শিশুদের শৈশব ভুলে যাচ্ছি, তখন এই ছবির কোন পুনঃ প্রদর্শন আমাদের মনে করিয়ে দেয় প্রতিটি শিশুই বিশেষ, প্রতিটি শিশুই এক অনন্য তারার মতো যারা নিজের আকাশের নিজস্বতার আলো জ্বালাতে চায়।
আমরা আশা করি এই ছবি পুনরাই দেখা আপনাকে আবার সেই মানবিক মুহূর্তের অনুভূতির ছোঁয়া দেবে ।যা প্রথমবার দেখার সময় আপনার হৃদয় ছুঁয়েছিল ।আসুন আবারো একবার ঈশানের সঙ্গে হাঁটি কল্পনার রঙের রাঙিয়ে তুলে শৈশবের আকাশ। আর শিখি শিক্ষা মানে শুধু বই নয় শিক্ষা মানে বোঝা ভালোবাসা এবং একটি শিশুর মনের দার খুলে দেওয়া।