Uttarakhand cloudburst 2025: ভারতের হিমালয়ান রাজ্য উত্তরাখন্ডে ফের দেখা দিল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিভীষিকা। মঙ্গলবার ভয়াবহ মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টির ফলে ধসে পড়ে একটি সম্পূর্ণ গ্রাম। যার জেরে এখনো পর্যন্ত কমপক্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি কারণ আবহাওয়া বিভাগ আগামী কয়েক দিন পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে, উত্তর কাশির হরসিলে এর কাছে ধারালি গ্রামে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ক্ষীরগাড এলাকায় হঠাৎ করে একটি বিশাল ধস নামে এর ফলে কাদামাটি ও জলের প্রবল ধারালি গ্রামটিকে একেবারে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এক্স এ একটি পোস্টে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায় তারা দ্রুত উদ্ধার অভিযানে নামে এবং ঘটনার স্থলে পৌঁছে তল্লাশি ও সাহায্যের কাজ শুরু করে(Uttarakhand cloudburst)।
উত্তরাখন্ড একটি ভূমিকম্প প্রবণ এবং পরিবেশ গঠিতভাবে অতি সংবেদনশীল অঞ্চল। বর্ষার মরশুমে এখানে চরম আবহাওয়ার ঘটনা ঘন ঘন ঘটে থাকে। আগে তুলনায় এখন মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টি আরও বেশি ঘন ও তীব্র হয়েছে। যার পেছনে বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন ।এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পাহাড়ি ঢালের আকস্মিকতা, অপরিকল্পিত নির্মাণ ও বৃক্ষচ্ছেদন যা এসব অঞ্চলে বৃষ্টি হলেই তার মুহূর্তের ধস ও আকস্মিক বন্যার রূপ নেয়।
আরও পড়ুন: মুদ্রানীতিতে রেপো রেট অপরিবর্তিত জিডিপি প্রবৃত্তির পূর্বাভাস 6.5% ট্রাম্পের সমালোচনার জবাব দিল RBI
টাইমস অফ ইন্ডিয়া একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এখনো পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে এবং আরো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে রাজ্যের একাধিক জেলায় 24 ঘন্টায় অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী সাত দিনও এমন আবহাওয়া বজায় থাকবে বলবে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী এক্স একটি পোস্টে লিখেন,” উত্তর কাশির ধারালি অঞ্চলে মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টির ফলে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের খবর অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও উদ্বেগ জনক। আমরা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং উদ্ধার কাজে সর্বশক্তি নিয়োজিত করা হয়েছে।”
এই ঘটনাটি স্মরণ করিয়ে দেয় গত বছরের কেরালার দুর্ভাগ্যজনক বন্যার কথা। যেখানে অস্বাভাবিকভাবে ভারী বর্ষণের ফলে ১৫০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। পরিবেশবিদরা তখনও বলেছিলেন, শুধু বৃষ্টির তীব্রতাই নয় সেই সঙ্গে অবৈধ নির্মাণ ও দুর্বল অবকাঠামো এই বিপর্যয়ের মাত্রা কে আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রমাণ করে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে অগ্রাহ্য করা ও পরিবেশগত সতর্কতা উপেক্ষা করা কতটা বিপদজনক।(Uttarakhand cloudburst)
ভারতের কৃষি ক্ষেত্রেও এই আবহাওয়ার প্রভাব পড়তে পারে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্তও বর্ষা মৌসুমে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বৃষ্টিপাত গড়ের এর চেয়ে বেশি হবে। ইতিমধ্যে 5 আগস্ট পর্যন্ত দেশের মোট বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে ৩% বেশি হয়েছে। এতে বিশ্বের অন্যতম প্রধান চাল,গম ,আখ উৎপাদনকারী দেশের কৃষি অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত এলাকা গুলিতে উদ্ধার ও পুনর্গঠনের কাজ চললেও এই ঘটনা আবারো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল কিভাবে জলবায়ু পরিবর্তন অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং পরিবেশের প্রতি অবহেলা একসঙ্গে ভয়ঙ্কর বিপদের জন্ম দেয় ।পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখনো দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা প্রয়োজন।