Weekend Tour Destination: পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল শুধু শিল্পাঞ্চল বা কর্মক্ষেত্রের জন্য নয় পর্যটনের ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রতিদিন আসানসোল স্টেশনে জেলার ভেতর বাইরে থেকে অসংখ্য মানুষ আসেন। কেউ আসেন কাজের সূত্রে কেউ বা পৌঁছে যান নানান কর্মস্থলে। কিন্তু আপনি কি জানেন, আসানসোল স্টেশন থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে এক অপূর্ব দর্শনীয় স্থান ঘাঘর বুড়ি মন্দির যা সপ্তাহ শেষের (Short weekend trip)ছোট্ট ছুটির জন্য একদম উপযুক্ত গন্তব্য।
কিভাবে পৌঁছাবেন(Asansol temple tour)
আসানসোল স্টেশন থেকে নেমে সোজা চলে আসুন বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে রানীগঞ্জ রুটের বাস ধরে নেমে পড়ুন কালিপাহাড়ি মোড়ে ।এরপর অটোতে চেপে পৌঁছে যাবেন ঘাঘর বুড়ি মন্দিরে। যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত হলেও প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে পৌঁছে যাবেন আপনার গন্তব্যে।
প্রাচীন জাগ্রত মন্দির (Ghaghar Buri Temple)
নুনিয়া নদীর তীরে অবস্থিত এই মন্দির রাঢ় বাংলার অন্যতম জাগ্রত দেবস্থান। ভক্তদের বিশ্বাস মা ঘাঘর বুড়ির মুখ আছে মনোবাসনা জানালে তা পূর্ণ হয়। এ বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন পুজো দিতে। মন্দিরের গর্ভ গৃহে রয়েছে তিনটি মূর্তি মাঝে মা ঘাঘরবুড়ি, বামে মা অন্নপূর্ণা, ডানে পঞ্চানন মহাদেব। কেউ আসেন পরিবারের মঙ্গল কামনায়, কেউ বা জীবনের নতুন পথচলা শুরু করার আগে আশীর্বাদ নিতে।
মন্দির চত্বর ঘিরে রয়েছে সবুজের সমারোহ। কিন্তু এখানকার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মন্দিরের পিছনের খরস্রোতা নুনিয়া নদী। নদীর মধ্যে রয়েছে এক অনন্য জলশ্রোত যা দেখতে অনেকটা ঝর্ণার মত।শীত, গ্রীষ্ম ও বর্ষা সারা বছর এই জলস্রোত বিরামহীনভাবে বইতে থাকে। নদীর গভীরে একটি ঘূর্ণিপাকও রয়েছে যা দূর থেকে দেখতে মনোমুগ্ধকর হলেও নিরাপত্তার কারণে যেখানে নামানো নিষিদ্ধ। কারণ জলে নামে প্রবল জল স্রোতের কারণে বিপদ ঘটতে পারে।
ঘাঘর বুড়ি মন্দির(Spiritual tourism)দর্শন এরপর পাশেই ঘুরে দেখতে পারেন মহাকাল মন্দির ও সাঁইবাবা মন্দির। এই মন্দিরগুলিও স্থানীয় ও বাইরের দর্শনার্থীদের কাছে সমান জনপ্রিয় ফলে একবার গেলেও একসঙ্গে একাধিক স্থান ঘুরে দেখা সম্ভব।
আসানসোল মহকুমার ডিসেরগড় থেকে আসা এক পর্যটক, জয়শ্রী মাঝি বলেন,” খুব কাছাকাছি থাকি কিন্তু কখনো আসা হয়নি। এবার প্রথম এলাম পরিবেশটা এত সুন্দর যে মনটা সত্যি ভালো হয়ে গেল।”

মন্দির সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে এক জনপ্রিয় চায়ের দোকান। সারা দিনের ভ্রমর শেষে এক কাপ চা আপনাকে নতুন করে সতেজ করে তুলবে। এছাড়াও রয়েছে স্থানীয় খাবারের দোকান যেখানে আপনি পেট ভরে মধ্যাহ্নভোজন সেদিন নিতে পারবেন।প্রকৃতির কোলে নদীর তীরে আর দেবীর আশীর্বাদ এর সময় কাটাতে চাইলে ঘাঘর বুড়ি মন্দির হতে পারে আপনার Weekend tour Destination সহজ যাতায়াত, সুন্দর পরিবেশ এবং আধ্যাত্মিক আবহ মিলিয়ে এই স্থানটি একবার ঘুরে আসার মত। আপনি যদি শহরের কোলাহল থেকে কিছুটা সময়ের জন্য মুক্তি পেতে চান, তবে সপ্তাহের ছুটিতে ঘাঘর বুড়ি মন্দিরে একবার ঘুরে আসুন। প্রকৃতি ধর্ম আর শান্তির মিলনস্থল এই জায়গা আপনার মনে গেঁথে যাবে দীর্ঘদিন।