আজকের রাশিফল আবহাওয়া Human Interest Story খুঁটিনাটি বিনোদন প্রকল্প Tech চাকরি ব্যবসা বাণিজ্য লাইফস্টাইল শেয়ার মার্কেট অন্যান্য

Puri Jagannath Temple Ratna Bhandar Mystery: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডারের অমোঘ রহস্য

Published on: August 24, 2025
Puri Jagannath Temple Ratna Bhandar Mystery

Puri Jagannath Temple Ratna Bhandar Mystery: ভারতের প্রাচীনতম ও বিখ্যাত ধর্মীয় স্থাপনা জগন্নাথ মন্দির। কেবল আধ্যাত্মিক ভক্তির কেন্দ্র নয় বরং রহস্য ও অলৌকিক কাহিনীর আঁতুরঘরও বটে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু শতাব্দীর অজানা কাহিনী সেসবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হলো মন্দিরের অন্তরে লুকিয়ে থাকা রত্নভাণ্ডার (Ratna Bhandar Mystery)।

৮০০ বছরের পুরনো এই মন্দিরের ভেতরে রত্নভাণ্ডার নিয়ে বহু গল্প প্রচলিত। ৩৭ হাজার স্কোয়ারফুট জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ২১৪ ফুট উঁচু এই মন্দিরের প্রতিটি প্রাচীর ও কক্ষ যেন লুকিয়ে আছে রহস্য। বিশেষ করে অন্ধকার রেজাল্ট চেম্বারকে ঘিরে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই।

রত্না ভান্ডারের এর ভেতরে কি আছে?

মন্দিরের রত্নভাণ্ডার আসলে দুটি কক্ষ নিয়ে গঠিত একটি বাইরের কক্ষ এবং একটি ভিতরের কক্ষ।

  • বাইরের পক্ষে রাখা আছে প্রভু জগন্নাথের সোনার মুকুট এবং তিনটি সোনার মালা প্রতিটির ওজন প্রায় ১২০ তোলা।
  • ভেতরের কক্ষে রয়েছে প্রায় ৭৪ টি সোনার অলংকার প্রতিটির ওজন ১০০ তোলার বেশি।

এছাড়া সোনার প্লেট, হিরে, মুক্ত, প্রবাল এবং ১৪০ টিরও বেশি রুপার অলংকার মজুত আছে।
এত বিপুল ধন-সম্পদ সযত্নে সংরক্ষিত থাকলেও কক্ষটি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। প্রায় ৪৬ বছর ধরে এই চেম্বারটি কারো প্রবেশাধিকারবিহীন অবস্থায় রহস্যে মোরা ছিল।

ইতিহাসে রত্ন ভান্ডারের উল্লেখ

স্থানীয় ইতিহাস এবং শিলালিপিতে রত্ন ভান্ডারের উল্লেখ বারবার পাওয়া যায়

  • ১৪৬৬ সালে গজপতি কপিলেন্দ্র দেব প্রভু জগন্নাথ কে বিপুল পরিমাণে সোনা ও রত্নখচিত অলংকার এবং বাসনপত্র দান করেছিলেন
  • ইতিহাসবিদ আরডি বন্দ্যোপাধ্যায়ের তার গ্রন্থে “History of Orissa” লিখেছেন, ১৮৯৩ সাল পর্যন্ত অনেক নৈবেদ্য অলংকার এখনও প্রচলিত ছিল
  • ১৯২৬ সালে গজপতি চতুর্থ রামচন্দ্র দেব দায়িত্ব গ্রহণ করে রত্ন ভান্ডারের অলংকার এবং নগদ সঠিক রশিদ হাজির করেছিলেন। সেই মূল রেকর্ড গুলি আজও পুরীর কালেক্টরেট রুমে সংরক্ষিত রয়েছে।

১৯৫২ সালে জগন্নাথ মন্দির আইন অনুসারে গজপতি শাসক রত্নভান্ডারটি শীল করে দেন। ১৯৬৭ সালে উড়িষ্যা গেজেট রত্নভান্ডারের একটি বিস্তারিত তালিকা ও প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে ৮৩৭টি মূল্যবান সামগ্রীর বিবরণ দেওয়া হয়।

সাপের কিংবদন্তি ও অলৌকিক কাহিনী

স্থানীয় মানুষ বিশ্বাস করেন, মন্দিরের ধন-সম্পদ নাকি সাপেদের দ্বারা সুরক্ষিত। এ কারণেই বহু বছর ধরে সাধারণ মানুষ তো বটেই, কর্তৃপক্ষ কক্ষটিতে প্রবেশ করতে সাহস করেননি। রহস্য বাড়িয়েছে এমন সব কিংবদন্তি যা বিজ্ঞানেও এখনো খনন করতে পারিনি।

রক্ত ভান্ডার খোলার মুহূর্ত

২০২৪ সালের ১৪ই জুলাই অবশেষে এই রহস্যভেদ ঘটে। ছেচল্লিশ বছর পর রত্ন ভান্ডার খোলা হয় এবং উড়িষ্যা সরকার ১১ জন প্রতিনিধির একটি দল ভেতরে প্রবেশ করে। চাবি না পাওয়ায় তারা ভেঙেই কক্ষ খোলা হয়। দলের নেতৃত্ব দেন উড়িষ্যা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ রথ।

বাইরে এসে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আমরা কোন সাপ দেখিনি। দয়া করে গুজব ছড়াবেন না”। তবে কি কি ধন সম্পদ মিলেছে বা কোন অবস্থায় রয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

আরও পড়ুন: খরস্রোতা নদী ঘূর্ণিপাক আর জাগ্রত মন্দির, সপ্তাহের শেষে ছোট ভ্রমণে ঘুরে আসুন আসানসোলের ঘাঘর বুড়ি মন্দির

Puri Jagannath temple Ratna Bhandar Mystery আজও মানুষের মধ্যে অগাধ কৌতুহল জায়গা। কয়েক শতাব্দীর ইতিহাস অমূল্য ধন সম্পদ আর অলৌকিক কাহিনী মিলিয়ে এটি যেন এক জীবন্ত রহস্য কাহিনী। যদিও আধুনিক প্রশাসনিক পদক্ষেপে রত্নভাণ্ডার খোলা হয়েছে, তবুও এর ভেতরের প্রতিটি অলংকার প্রতিটি রেকর্ড এখনো এক অজানা জগতের পর্দা উন্মোচন করে।

পুরীর ভক্তদের কাছে জগন্নাথ দেবকে কেবল ভক্তির পথিক নন, তার মন্দিরের রত্ন ভান্ডার ও ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও রহস্যময় ইতিহাসের এক অমূল্য নিদর্শন।

Mahasina Nasrin

আমি মাহাসিনা নাসরিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছি। বর্তমানে আমি আচার্য ইনস্টিটিউট অফ গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করছি। বর্তমানে আমি ২৪ ঘন্টা আরামবাগে সংবাদ প্রতিবেদক, ভয়েস ওভার শিল্পী এবং কপি লেখক হিসেবে কাজ করছি। আমি পূর্বে টেক মিডিয়া, টেক ওয়াইফাই, সোকালের বার্তা ওয়েবসাইটে কন্টেন্ট লেখক হিসেবে যুক্ত ছিলাম।

Join WhatsApp

Join Now

Join Telegram

Join Now

Leave a Comment