Kashish Methwani: সৌন্দর্যের মঞ্চে রাজত্ব করে সেনার প্যারেড গ্রাউন্ডে বীরত্বের পথিক হয়ে ওঠা এমন উদাহরণ খুবই বিরল। কিন্তু পুনের মেয়ে কাশিশ মেথওয়ানি সেই অসম্ভবকেও সম্ভব করেছেন। ২০২৩ সালে যিনি মুকুট জিতেছিলেন মিস ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়া খেতাবের, তিনি আবার 2025 সালের 6 সেপ্টেম্বর ভারতীয় সেনার আর্মি এয়ার ডিফেন্স এর লেফটেন্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন।
Kashish Methwani এর গল্প শুরু হয়েছিল আর্মি স্কুলের করিডোর থেকেই। ছোটবেলা থেকেই উর্দি শৃঙ্খলা এবং দেশ সেবার মূল্যবোধ তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। ২০২১ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে NCC ক্যাডেট হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেদিনের প্রদর্শনীতে তার অসাধারণ কৃতিত্ব তাকে এনে দিয়েছিল অল ইন্ডিয়া বেস্ট ক্যাডেট ট্রফি। সেই সম্মানজনক পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে। পরে কাশিশ জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর সেই করমর্দন তার মধ্যে সেনার উর্দি পড়ার স্বপ্নকে দৃঢ় করে দিয়েছিল।
তবে তার জীবন পথ কখনোই এক রৈখিক ছিল না ।উনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োটেকনোলজিতে স্নাতক এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স থেকে এমএসসি সম্পূর্ণ করেছিলেন তিনি। তার গবেষণা এতটাই প্রশংসিত হয়েছিল যে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সরাসরি PhD করার প্রস্তাব দিয়েছিল। বেশিরভাগ মানুষ এরকম সাফল্য সন্তুষ্ট হতেন, কিন্তু তিনি ছিলেন অন্যরকম।
২০২৩ সালের সৌন্দর্যের মঞ্চে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল Kashish Methwani। নিম তিনি দিতে নেন ‘মিস ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়া’ খেতাব। সেই সাফল্য তাকে পৌঁছে দিয়েছিল এর মঞ্চেও। সেখানে তিনি আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তার বার্তা ভাগ করে নিয়েছিলেন। গ্ল্যামার দুনিয়ার প্রচুর অফার এসেছিল তার কাছে। কিন্তু তিনি বেছে নেন এক ভিন্ন রাস্তা দেশ সেবার পথ।
২০২৪ সালে তিনি সারা ভারতের দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন Combined Defence Services (CDS) পরীক্ষায়। এরপর ভর্তি হন চেন্নাইয়ের অফিসার্স ট্রেনিং একাডেমিতে(OTA)। দীর্ঘ ও কঠিন প্রশিক্ষণ শেষে সেখান থেকে একাডেমিক আন্ডার অফিসার খেতাব অর্জন করেন তিনি। এটি এমন এক সম্মান, যার নেতৃত্ব গুণ, শারীরিক দক্ষতা, শুটিং রেঞ্জের পারফরম্যান্স এবং খেলাধুলার কৃতিত্বের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন: হিন্দি জানেন মাসে ১০ লক্ষ টাকা বেতনের চাকরি দেবে ফেসবুক প্যারেন্ট কোম্পানি
শেষমেষ ২০২৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর Kashish Methwani ভারতীয় সেনা আর্মি এয়ার ডিফেন্স লেফটেন্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত হন। তার পরিবারে এই প্রথম কোনও মহিলা সেনাবাহিনীতে যোগ দিলেন।

গ্ল্যামার, গবেষণা আর দেশ সেবা কাশিশের সামনে ছিল একাধিক রাস্তা। তিনি বেছে নিয়েছেন সেই পথ যা অন্য দুটির চেয়ে অনেক বেশি কঠিন, কিন্তু একই সঙ্গে মহৎ। তিনি প্রমাণ করেছেন, সাহস, অধ্যাবসায় আর আত্মবিশ্বাস থাকলে জীবনের একাধিক স্বপ্ন একসঙ্গে পূরণ করা সম্ভব।
কাশিশের এই যাত্রা শুধু নতুন প্রজন্মের জন্য প্রেরণায় নয়, বরং প্রমাণ যে নারীরা ইচ্ছে করলেই যে কোন ক্ষেত্রেই নিজেদের সর্বোচ্চ সাফল্য এনে দিতে পারেন। সৌন্দর্যের মুকুট থেকে সেনার উর্দি- কাশিশ মেথওয়ানি আজ এক অনন্য উদাহরণ।