মধ্যপ্রাচ্যেএর উত্তেজনা বাড়ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব কার্যত উপেক্ষা করে শনিবার গাজায় ফের হামলা চালালো ইজরায়েল। এই হামলায় এখনো পর্যন্ত কমপক্ষে ছয় জন নিহত বহু মানুষ আহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর। ইজরায়েলির যুদ্ধ বিমানের হামলায় গাজায় একাধিক অঞ্চল ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব ও হামাসের প্রতিক্রিয়া
এর আগে ফ্রম প্রশাসন গাজায় সংঘাতের অবসান ঘটাতে এক নতুন শান্তি প্রস্তাব পেশ করেছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্টের আহবানে সাড়া দিয়ে প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস যুদ্ধ বিরতির দিকে এগোতে রাজি হয়েছিল বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হয়। হামাসের একাধিক নেতা জানিয়েছিলেন, বন্ধুদের মুক্তি ও যুদ্ধ বিরোধী নিয়ে আলোচনায় বসতে তারা প্রস্তুত।
এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্প সরাসরি ইসরাইলের সরকারকে গাঁজা সামরিক অভিযান স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের তরফে জানানো হয়েছিল,“মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি করতে এবং বন্দীদের মুক্তির বিষয়ে অগ্রগতি আনতে” ইজরাইলের হামলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
নির্দেশ উপেক্ষা করে ইজরায়েলের নতুন হামলা
তবে সেই নির্দেশের পর মাত্র একদিন পেরোতেই ফের ইজরায়েলি বিমান বাহিনী গাজা উপত্যকায় বোমাবর্ষণ চালায়। ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, এই হামলা নাকি “হামাসের সামরিক ঘাঁটি অস্ত্রভাণ্ডার” লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। তবে গাজার স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, হামলার শিকার হয়েছে আবাসিক এলাকা। বহু শিশু ও নারী আহত হয়েছে।
নেতানিয়াহুর অবস্থান
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দপ্তর থেকে শনিবার দুপুরে এক বিবৃতিতে বলা হয়,“ইজরায়েল ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত। তবে জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে ইজরায়েল কোন আপোষ করবে না।”
এই মন্তব্য থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি ইজরায়েল শান্তি প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছে না?
সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও দ্বিধা
ইজরায়েলি সেনা প্রধান জানিয়েছেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের জন্য বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তবে তিনি হামলা কমানো হবে কিনা তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। এই অস্পষ্ট অবস্থান থেকেই বিশ্লেষকদের মতে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়ই গাজার ফের বোমাবর্ষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন,“গাজায় নিরীহ নাগরিকদের প্রাণহানি বন্ধ করতে অবিলম্বে উভয়পক্ষকেই সংযম প্রদর্শন করতে হবে”।
আরও পড়ুন: প্রিলিমসের পরেই প্রকাশ পাবে প্রফেশনাল আনসার কি
পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ
গজায় চলমান এই হামলার ফলে যুদ্ধ বিরতির সম্ভাবনা আরো ক্ষীন হয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। ফ্রম প্রশাসনের শান্তি উদ্যোগও কার্যত অনিশ্চয়তার মুখে। হামাস ও ইজরায়েল উভয়ে নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকলে এই সংঘাত আরো দীর্ঘায়িত হতে পারে।
এদিকে, গাজার রাস্তায় ধ্বংস স্তুপ এর নিচে এখনো অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা। স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার কাজ চালালেও অবিরাম বোমা বর্ষণ সেই কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন গুলির দাবি, অবিলম্বে যুদ্ধ বিরোধী ঘোষণা করে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।