Jhansi Station Army Doctor Delivery: ঠিক জেনো সিনেমার পর্দা থেকে উঠে আসা বাস্তব কাহিনী। ‘থ্রি ইডিয়টস’ এর সেই বিখ্যাত দৃশ্য যেখানে অপারেশন থিয়েটার ছাড়াই জন্ম নেয় শিশু। এবার সেই দৃশ্যই ফিরে এলো বাস্তবের মাটিতে। আর ঘটনার স্থল উত্তরপ্রদেশে ঝাঁসি রেলওয়ে স্টেশন। সিনেমা নয় জীবনের কঠিন মুহূর্ত সঠিক সিদ্ধান্তে, উপস্থিত বুদ্ধি ও সাহসিকতায় এক সেনা চিকিৎসক সত্যি বদলে দিলেন এক পরিবারের ভাগ্য।
হাসপাতাল পৌঁছনোর আগেই প্রসব শুরু
শনিবার দুপুরে ঝাঁসি বীরাঙ্গনা লক্ষীবাঈ রেলওয়ে স্টেশনে ঘটেই অবিশ্বাস্য ঘটনা। পানভেল থেকে বারবানকি গামি এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা করছিলেন এক গর্ভবতী মহিলা সঙ্গে ছিলেন তার স্বামী ও সন্তান। হঠাৎ করেই ট্রেনের মধ্যে উঠল প্রসব বেদনা। দ্রুত রেলমদদ অ্যাপের মাধ্যমে সাহায্যের আবেদন জানানো হয়। কিন্তু, সমস্যা হল সময়ের, হাসপাতাল তো দূরে ,স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই প্রসব যন্ত্রণা চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে যায়।(Jhansi Station Army Doctor Delivery)
ঠিক তখনই স্টেশনের প্লাটফর্মে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ঝাঁসির সামরিক হাসপাতালের মেজার ও চিকিৎসা রোহিত বাচওয়ালা। আচমকা নারীর অসুস্থতা নজরে আসে তার। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে ছুটে যান তিনি। স্টেশন কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই অ্যাম্বুলেন্স ডাকলেও তা পৌঁছানোর আগেই মহিলার প্রসব শুরু হয়ে যায়।
“মৃত্যু ও জীবনের প্রতিমুহূর্তের লড়াই ছিল ওটা” — বললেন মেজর রোহিত
রেলের মহিলা কর্মীদের অনুরোধ করা হয় যাতে তারা একটি অস্থায়ী গোপন জায়গা তৈরি করে দেয় ।এরপর শুরু হয় এক অসাধারণ মানবিক অভিযান প্রসবের পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় শুধুমাত্র একটি পকেট ছুরি একটি হেয়ার ক্লিপ ও ধুতির সাহায্যে।
ডাক্তার রোহিত জানান ,”সঠিক অপারেশন থিয়েটার বা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিছুই ছিল না আমার হাতে, একমাত্র ভরসা ছিল আমার সঙ্গে থাকা পকেট চুরি আর উপস্থিত বুদ্ধি।” তিনি আরও বলেন,” আম্বিলিক্যাল কর্ড ক্লাম্প করতে হেয়ার ক্লিপ ব্যবহার করি এবং শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার পর পকেট নাইফ দিয়ে কর্ড কেটে দিই।”
ডাক্তারের মতে, মা ও সন্তানের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। সময় নষ্ট করার সুযোগ ছিল না এক সেকেন্ডও। “প্রতিমুহূর্তে ছিল মৃত্যু ও জীবনের লড়াই” বলেন তিনি। “আমরা তৎক্ষণাৎ জায়গাটি পরিষ্কার করে যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে, ও সামান্য উপকরণ দিয়ে প্রসব সফলভাবেই করাই।”
প্রসবের পর রেল এম্বুলেন্স করে মা ও নবজাতিকাকে নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয় । চিকিৎসকদের মতে, তারা দুজনেই এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন এবং ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছেন।
পুরো ঘটনা প্রতিটি মুহূর্তে উঠে এসেছে একজন চিকিৎসকের দায়িত্ববোধ, তৎপরতা এবং মানবিকতা। অনেকেই বলছেন ,এই ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে দেয় শুধু যন্ত্র নয়, মানুষের ইচ্ছাশক্তির সাহস ও সদিচ্ছায় পারে জীবন বাঁচাতে।
আজও যদি কেউ ভাবে সিনেমার মতো গল্প কেবল পর্দাতেই দেখা যায় তাহলে তাদের ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করে দিল মেজর ডা. রোহিত বাচওয়ালা ।এই ঘটনা নিঃসন্দেহে একটি অনুপ্রেরণা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বহুদিন।