Trump Tariff War with India: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ৫০ শতাংশ শুল্ক নীতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করছেন জন হপকিন্স বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট মার্কিন অর্থনীতিবিদ স্টিভ হ্যাঙ্ক। কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ আসলে তা নিজের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থানকে ধ্বংস করছে।
স্টিভ হ্যাঙ্ক স্পষ্ট ভাষায় বলেন,” ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি পুরোপুরি ‘অর্থনৈতিকভাবে ভুল’ ও ‘অযৌক্তিক’। নেপোলিয়নের উপদেশ মতো, শত্রু যখন নিজেকে ধ্বংস করছে তখন হস্তক্ষেপ না করাই ভালো। ট্রাম্প নিজেই নিজের পতনের পথে হাঁটছেন।
তিনি পরামর্শ দেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয় শংকরকে কিছুদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে অপেক্ষা করতে হবে, কারণ তার মতে ট্রাম্পের এই ‘house of cards‘ খুব শিগগিরই ভেঙে পড়বে।
শুল্ক বৃদ্ধি নিয়ে উত্তেজনা
সম্প্রতি ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। যুক্তি হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি চালিয়ে যাচ্ছে। এই পদক্ষেপের ফলে টেক্সটাইল, মেরিন পণ্য ও চামড়া রপ্তানি খাতে বড় ধাক্কা লাগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারত সরকার এই পদক্ষেপকে,” অন্যায়, অযৌতিক এবং অগ্রহণযোগ্য” বলে নিন্দা করেছে। প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন অর্থনৈতিক চাপের মুখে ভারত পিছিয়ে যাবে না।এই পদক্ষেপে ভারত এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শুলকোপ্রাপ্ত দেশের তালিকায় রয়েছে যেখানে ব্রাজিলও রয়েছে।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে ভারতীয় পোশাক পরে প্রবেশে বাধা, ভিডিও ভাইরাল
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
রাশিয়া ও চীন সহ একাধিক দেশ ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে করা সমালোচনা করেছে। ক্রেমলিন মুখ্য পাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন,” আমরা অনেক হুমকি শুনছি যেখানেই দেশগুলিকে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করতে বাধ্য করার চেষ্টা হচ্ছে। এই ধরনের পদক্ষেপ আমরা বৈধ বলে মনে করি না।”ভারতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত সু ফেইহং মন্তব্য করেন,” একজন বুলি কে যদি এক ইঞ্চি দেন, সেই এক মাইল নেবে। শুল্ক কে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে অন্য দেশকে দমন করা জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থী, WTO এর নিয়ম ভঙ্গ করে এবং যা অজনপ্রিয় ও টেকসই নয়।
অর্থনিতিবিদদের বিশ্লেষণ
স্টিভ হ্যাঙ্ক বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে কারণ আমেরিকানদের ব্যয় দেশটির মোট জাতীয় উৎপাদনের চেয়ে বেশি এই প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন”Trump Tarrif economics is absolutely rubbish”। তিনি মনে করেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি স্বল্প মেয়াদে বাজারে কিছু ইতিবাচক প্রভাব ফেলেও দীর্ঘ মেয়াদে তা অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া
শুক্রবার ট্রাম ঘোষণা দেন শুল্ক নিয়ে বিরোধ মিট না হওয়া পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে কোন বাণিজ্য আলোচনা হবে না। একই দিনে তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি মার্কিন আপিল কোর্ট শুল্কের বিরুদ্ধে রায় দেয়, তবে ১৯২৯ সালের মতো গ্রেট ডিপ্রেশন ফিরে আসতে পারে।
ট্রাম্প এ লেখেন, Truth Social লেখেন,” শুল্কের ফলে শেয়ারবাজারে বিশাল ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। প্রায় প্রতিদিন নতুন রেকর্ড গড়ছে। শত শত বিলিয়ন ডলার আমাদের দেশে আসছে।”তিনি আরো লেখেন,” আমাদের দেশ প্রাপ্য সফলতা ও গৌরবের, নয় বিশৃঙ্খলা, ব্যর্থতা ও অসম্মানের।God bless America!
বিশ্লিশক্তির মতে,”Trump Tarrif war with India“শুধু বিপাক্ষিক বাণিজ্য উত্তেজনা তৈরি করছে না, বরং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সম্পর্কে নতুন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে। ভারত যেখানে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলার পথে এগোচ্ছে, ট্রাম্প সেখানে করা শুল্কনীতির মাধ্যমে নিজেকে বিচ্ছিন্নতার পথে ঠেলে দিচ্ছেন বলে অনেকে মনে করছেন।