Wow Momo Success Story: ব্র্যান্ডের পেছনে দুই তরুণ সাগর-দারিয়ানি ও বিনোদ কুমার হোমাগাইএর গল্প আজ অনেকে অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখে থাকে। কলেজ জীবনে তারা ন্মূমি পাগল হয়ে যাওয়ার খাবার মোমো কেমন চলবে তা নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করে। আজ সেই স্বপ্ন কোটি টাকার ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
প্রারম্ভিক বাজেট ও কঠোর শুরু
সাগর ও বিনোদ শুরু করেছিলেন মাত্র ৩০ হাজার টাকার বিনিয়োগে, যা তারা তাদের বাবার থেকে ধার করেছিলেন। এই অর্থই তারা কলকাতার স্পেন্সার সুপার মার্কেটে একটি ছোট ৬×৬ ফুট কিয়স্কে তাদের প্রথম মম বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছিল। কিয়স্কটিতে মাত্র একটি টেবিল ও সাধারণ রান্নার ব্যবস্থা ছিল।
যদিও এটি ছিল অত্যন্ত সীমাবদ্ধ এবং সংকটপূর্ণ শুরু, তবে তারা বিশ্বাস ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন।
দৃষ্টিভঙ্গি ও অংশীদারিত্ব
সাগর এবং বিনোদ দুজনেই একটি স্পষ্ট ভিশন নিয়ে কাজ করেছেন। সাগর ব্র্যান্ডিং এবং বিপণন দিক দেখেছেন, আর বিনোদ উৎপাদন ও মান নিয়ন্ত্রণ এর দিক নিয়েছিলেন। তারা একে অপরকে না যে শুধুমাত্র অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন, বরং সমানভাবে নেতৃত্ব ও দায়িত্ব ভাগাভাগি করেছিলেন।
তারা ক্যাম্পাস প্লেসমেন্টে উচ্চ দরকার চাকরির প্রস্তাব পেয়েছিলেন। যা বেছে নেওয়া অনেকের কাছেই স্বপ্ন, কিন্তু তারা এর সম্ভাবনাকে বিশ্বাস করে সেই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করেছিলেন।
পরবর্তীকালে তারা ব্যবসার প্রসারের জন্য কিছু শেয়ার বিক্রি ও অংশীদার নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। উদাহরণস্বরূপ তারা ইন্ডিয়ান এঞ্জেল নেটওয়ার্ক কে ১০% শেয়ার অফার করেছিলেন। এছাড়া কর্মচারীদের উৎসাহ দানে কর্মচারী স্টক অপশন পরিকল্পনা রাখার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
বিস্তার ও ব্র্যান্ডের উত্তরণ
Wow! momoএক সাধারন স্টল থেকে দ্রুত কুইক সার্ভিস রেস্টুরেন্ট শিল্পে পরিণত হয়। ডিসেম্বর ২০২১ এ, তাদের ছিল 19 টি শহরে ৪২৫টি আউটলেট যা তিনটি ব্র্যান্ড লাইন Wow! momo, Wow!China, Wow! Chicken এর অধীনে পরিচালিত হতো। তাদের মাসিক অভ্যন্তরীণ রাজস্ব প্রায় 40 থেকে 45 কোটি টাকার কাছাকাছি।
বিনিয়োগদাতারা ধরা শুরু করে। ২০১৭ সালে Lighthouse Funds ,IAN ও এ ৪৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। পরবর্তীতে Fabindia এর MD উইলিয়াম বিসেল তিন কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন, এবং ২০১৯ সালে Tiger Global ১৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। এভাবে কোম্পানির নেট মূল্য ৮৬০ কোটি টাকার ঘরে পৌঁছে যায়।
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও কৌশল
সাধারণভাবে আজ যে কোন দ্রুতবর্ধী খাদ্য ব্র্যান্ডের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মান রক্ষা, সরবরাহ শৃংখলার বজায় রাখা এবং প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। Wow! momo কোভিড ১৯ মহামারীতে এই চ্যালেঞ্জগুলিকে সফলভাবে মোকাবিলা করেছে।
বিশেষ করে তারা কফি ও ক্যাফে ব্যান্ড cafe coffee Day এর সঙ্গে অংশীদারিতে গিয়ে আউটলেস স্পেস খরচ ও রাজস্ব ভাগাভাগি করে একটি রিক্স মডেল ব্যবহার করেছিল। এই অংশীদারিত্ব তাদেরকে ব্যবসা চালিয়ে যেতে এবং ক্রমাগত গ্রাহক সেবা দিতে সহায়তা করেছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
Wow! momoএর লক্ষ্যমাত্রা মাত্র ভারতেই সীমাবদ্ধ নয়। তারা ৪৭৭টির বেশি আউটলেট খোলার উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হাতে নিয়ে চলেছে। তারা ভারতীয় সাদকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিয়ে একটি গ্লোবাল ফুড পাওয়ার হাউস হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে।
সাগর ও বিনোদের যাত্রা প্রমাণ করে যে যদি অভিমুখ স্পষ্ট থাকে, আত্মবিশ্বাস থাকে এবং কঠোর প্রয়াস থাকে তাহলে সীমিত আরম্ভ থেকেও বড় আর্থিক ও সামাজিক প্রভাব তৈরি করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: জুবিন গর্গের মৃত্যু, ময়না তদন্তে নতুন তথ্য, তদন্তে তৎপর অসম CID
এই গল্পে কয়েকটি মূল দৃষ্টিকোণ চোখে পড়ে:
- আগ্রহ ও বাস্তব চাহিদার মিল ছিল-মম চাই ইতি মধ্যেই অনেকের প্রিয় স্ট্রিট ফুড একটি ভালো বাজার সম্ভাবনা ছিল।
- বিকল্প গুলোর ত্যাগ-চাকরির পাকা সুযোগ থাকা সত্বেও তারা আত্মনির্ভর পথ বেছে নেন
- সঠিক অংশীদারিত্ব-তাদের ব্যবসার প্রসারের সঠিক বিনিয়োগ ও অংশীদারিত্ব খুব কাজে আসে
- কৌশলগত মননশীলতা -মহামারীর সময় তাদের অংশীদারিত্ব মডেল ও ক্রমবর্ধিত ও ব্যবসায়িক নমনশীলতা কার্যকর ভূমিকা রাখে
- দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টি-তারা শুধু আরো আউটলেট খোলার দিকে মনোনিবেশ নয়, ব্র্যান্ড ও সংস্কৃতি গড়ে তোলার দিকে কাজ করছেন।
এই গল্প শুধু একটি সফল ব্র্যান্ডের উদাহরণ নয়, বিশেষ করে শিক্ষার্থীরাও শিখতে পারেন, সীমিত শুরু ছাড়াও আসক্তি, উদ্ভাবন ও সচেষ্ট পরিকল্পনায় যে যাত্রা তৈরি হতে পারে।